বিশ্বের শান্তিপ্রিয় মানুষের দাবির পর ইসরাইল অবরুদ্ধ গাজায় নির্বিচারে বোমা হামলা করে যাচ্ছে। আর এতে প্রতিদিন শত শত মানুষ মারা যাচ্ছে। দখলদার বাহিনীর টানা বোমা বর্ষণে এ পর্যন্ত প্রায় ৬ হাজার মানুষ মারা গেছে। বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে বিদ্যুৎ. পানি ও গ্যাসের লাইন। এতে করে বন্ধ হয়ে গেছে চিকিকিৎসা সেবা। অনাহারের লাখ লাখ মানুষ। চারদিকে শুধুই হাহাকার। সীমান্ত বন্ধ থাকার কারণে কেউ সাহায্যও করতে পারছে না।
জানা যায়, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের নির্বিচার বিমান হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৭০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে। গত ৭ অক্টোবর হামাসের সাথে ইসরাইলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর উপত্যকায় ইসরাইলি হামলায় এক দিনে সর্বোচ্চ প্রাণহানির ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, রাতভর ইসরাইলি বিমান হামলায় ৭০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হামলায় আহত হয়েছেন আরো কয়েক শ’ মানুষ। ইসরাইলের সামরিক বাহিনী হাসপাতাল, আশ্রয়কেন্দ্র এমনকি মসজিদেও বিমান হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
ইসরাইল বলেছে, তারা অবরুদ্ধ উপত্যকায় রাতভর হামলায় কয়েক ডজন হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। তবে ইসলামপন্থী এই গোষ্ঠীকে ধ্বংস করতে চলমান যুদ্ধে তাদের দীর্ঘ সময় লাগতে পারে।
হামাসের সাথে যুদ্ধে ইসরাইলের প্রতি সমর্থন জানাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা ইসরাইল সফর করেছেন। মঙ্গলবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাঁক্রো ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সাথে বৈঠক করেছেন। এ সময় হামাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইসরাইলের প্রতি ফ্রান্সের সমর্থন ও সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
বিবৃতিতে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, গত ৭ অক্টোবর হামাস-শাসিত এই উপত্যকায় ইসরাইলের বিমান হামলা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ৭৯১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ২ হাজার ৩৬০ জন শিশু রয়েছে। এর মধ্যে কেবল গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন ৭০৪ জন।
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কিদরা বলেছেন, ইসরাইলি বিমান হামলা শুরুর পর গত দুই সপ্তাহের মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় এটাই ছিল সবচেয়ে বেশি মৃত্যু।
হামাসের আকস্মিক হামলার মাধ্যমে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে ইসরাইলে এখন পর্যন্ত এক হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। হামাসের হামলায় ইসরাইলে নিহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।
এদিকে, সোমবার হামাসের যোদ্ধারা তাদের হাতে জিম্মি দুই ইসরাইলি নারীকে মুক্ত করে দিয়েছে। এ নিয়ে মোট চারজন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিকেই হামাস ২০০ জনের বেশি ইসরাইলি ও বিদেশীকে জিম্মি করেছে। সূত্র : রয়টার্স।