নানা অপকর্মের অভিযোগে গ্রেপ্তার নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়ার রাজধানীর ফার্মগেটের বাসায় অভিযান চালানো হয়েছে।
রোববার ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে বিদেশি অস্ত্র, ম্যাগাজিন, গুলি, বিদেশি মদ ও বিপুল পরিমাণ অবৈধ টাকা উদ্ধার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের-১ (র্যাব)-এর একটি দল।
র্যাবের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার-বিন-কাশেম সমকালকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, র্যাব-১-এর একটি বিশেষ দল অভিযান চালায় শামিমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরীর বাসায়। বাসা থেকে বিদেশি অস্ত্র, ম্যাগাজিন, গুলি, বিদেশি মদ ও বিপুল পরিমাণ অবৈধ টাকা উদ্ধার করা হয়।
এর আগে শনিবার সকালে তড়িঘড়ি করে দেশত্যাগের চেষ্টা চালানোর সময় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৩ সহযোগীসহ পাপিয়াকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
পাপিয়াকে গ্রেপ্তারের পর রাতে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শামিমা নূর পাপিয়ার প্রকাশ্য আয়ের উৎস গাড়ি বিক্রি ও সার্ভিসিংয়ের ব্যবসা। তবে এর আড়ালে তিনি মূলত অবৈধ অস্ত্র ও মাদকের ব্যবসা করতেন।
র্যাব জানায়, পাপিয়া কোনো কাজ বাগিয়ে নিতে পাঁচ তারকা হোটেলে সুন্দরী তরুণীদের পাঠিয়ে মনোরঞ্জন করতেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের। গত তিন মাসে তিনি শুধু ঢাকার একটি পাঁচ তারকা হোটেলেই বিল পরিশোধ করেছেন এক কোটি ৩০ লাখ টাকা। ওই হোটেলের প্রেসিডেন্ট স্যুট সবসময় তার নামে বরাদ্দ থাকত। হোটেলটির বারে তিনি প্রতিদিন বিল দিতেন প্রায় আড়াই লাখ টাকা। অথচ বৈধভাবে তার বার্ষিক আয় মাত্র ১৯ লাখ টাকা।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এসব ব্যাপারে র্যাবের একটি দল অনুসন্ধান করছিল বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
রোববার যুব মহিলা লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয় পাপিয়াকে। যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি নাজমা আকতার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক উপু উকিল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়াকে সংগঠনের গঠনতন্ত্রের ২২(ক) উপধারা অনুযায়ী দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হলো। এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে।