রাজনীতি ডেস্ক
রাজধানীর শাহবাগে আজ বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) সকাল ১১টায় চার রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত নতুন একটি রাজনৈতিক জোট আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করবে। জোটে অংশ নিচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), ইউপি বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন। জোটটি নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে গঠিত।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ছয় দলীয় জোট গণতন্ত্র মঞ্চের অংশ হলেও ২০২৪ সালের আগস্টের পর থেকে মঞ্চের কার্যক্রমে মন্থরতা দেখা দেয়। এই কারণে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন ও অন্যান্য মঞ্চ সদস্যদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে বিএনপির সম্ভাব্য আসন সমঝোতা এখনও চূড়ান্ত না হওয়ায় রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের শীর্ষ নেতৃত্ব নির্দিষ্ট আসন বরাদ্দ না পাওয়ায় মঞ্চ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম জানিয়েছেন, চার দলের সমন্বয়ে গঠিত নতুন জোটে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। তিনি জানান, “আমরা এখন আর গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে নেই, নতুন জোটে যাচ্ছি।” এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার শাহাদাৎ টুটুলও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জোটের রূপরেখা ও কাঠামো ইতিমধ্যেই নির্ধারণ করা হয়েছে। সূত্র মতে, নতুন জোটের সম্ভাব্য নাম হতে পারে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’। জোটের নীতিনির্ধারণ ও কার্যক্রমের জন্য তিনটি কাঠামো নির্ধারিত হয়েছে। জোট ঘোষণার পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয়ে মঙ্গলবার রাতেও বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
নতুন জোটের আত্মপ্রকাশ দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এক ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে এই ধরনের জোট গঠন রাজনৈতিক ভারসাম্য ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার নতুন রূপরেখা তৈরি করতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, চার দলের এই সমন্বয় নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সময় ভোটের ধারা ও আসন বিন্যাসকে প্রভাবিত করতে পারে।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের গণতন্ত্র মঞ্চ ত্যাগের পেছনে মূল কারণ হিসেবে রাজনৈতিক আসন বরাদ্দের বিষয়টি উল্লেখ করা হচ্ছে। গণতন্ত্র মঞ্চের অন্য পাঁচটি দলের জন্য বিএনপি থেকে আসন ছাড়ার মৌখিক আশ্বাস থাকলেও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের জন্য ইতিবাচক সাড়া না আসায় দলটি মঞ্চ ত্যাগের সিদ্ধান্ত নেয়।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, নতুন জোট গঠনের মাধ্যমে চারটি দল একদিকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে, অন্যদিকে তারা ভোটের সময় তাদের নিজস্ব পরিচয় বজায় রাখার সুযোগ পাবে। জোটের কার্যক্রম, নীতি-নির্ধারণ এবং আসন বণ্টনের কাঠামো আগামী দিনে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক প্রভাব এবং সমঝোতার দিক নির্দেশ করবে।
সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে, জোট ঘোষণার পর দলের নেতারা নির্বাচনী প্রস্তুতি, প্রার্থী তালিকা এবং স্থানীয় রাজনৈতিক সমন্বয় বিষয়ক বিষয়ে সভা ও পরিকল্পনা শুরু করবেন। নতুন জোটের এই আত্মপ্রকাশ দেশের রাজনৈতিক মানচিত্রে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হিসেবে দেখা দিচ্ছে।


