শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে ৬ কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের মামলার চার্জশিট গ্রহণ করেছেন আদালত।
আজ ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এ চার্জশিট গ্রহণ করেন। এ সময় মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এ বদলির নির্দেশ দেয়া হয়। একইসঙ্গে মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য আগামী ৮ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আজ আসামী পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুরকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাদের উপস্থিতিতে চার্জশিট গ্রহণ করেন।
এরআগে ২০২০ সালের ৪ আগস্ট দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজ বাদি হয়ে তাদের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। ‘দুদক আইন, ২০০৪’ এর ২৭ (১) ধারায় মামলাটি করা হয়। তদন্ত শেষে দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজ প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি দুদক পাপিয়া দম্পতির বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র অনুমোদন দেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওয়েস্টিন হোটেলের ২৫টি রুমে অবস্থান করে রুম-নাইট, রেস্তোরাঁর খাবার, মদ, স্পা, লন্ড্রি, মিনি বার ফুড, মিনি বার বাবদ মোট তিন কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬১ টাকার বিল ক্যাশে পরিশোধ করেন পাপিয়া। ওয়েস্টিন হোটেলে থাকা অবস্থায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার শপিং করেন। যার কোনো বৈধ উৎস তারা দেখাতে পারেননি। এ ছাড়া ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ বছরে বাসা ভাড়া বাবদ ৩০ লাখ টাকা, গাড়ির ব্যবসায় বিনিয়োগকৃত এক কোটি টাকা এবং নরসিংদীতে কেএমসি কার ওয়াশ সলিউশনে বিনিয়োগকৃত ২০ লাখ টাকা, বিভিন্ন ব্যাংকে তার এবং স্বামীর নামে জমাকৃত ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৮ টাকারও বৈধ কোনো উৎস পাওয়া যায়নি বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পাপিয়াসহ চারজনকে গ্রেফতার করে র্যাব। এর পর তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, বাংলাদেশি দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬শ’ জাল টাকা, ৩১০ ভারতীয় রুপি, ৪২০ শ্রীলঙ্কান মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ মার্কিন ডলার ও সাতটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
এর পর ২৩ ফেব্রুয়ারি পাপিয়ার ইন্দিরা রোডের বাসায় অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দু’টি ম্যাগজিন, ২০ রাউন্ড গুলি, ৫ বোতল বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, ৫টি পাসপোর্ট, ৩টি চেক, বেশকিছু বিদেশি মুদ্রা ও বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়।
ঐ ঘটনায় পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানার মাদক ও অস্ত্র মামলা, গুলশান থানায় মানি লন্ডারিংয়ের মামলা, বিমানবন্দর থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়। এ ছাড়া অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক।
২০২০ সালের ১২ অক্টোবর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরীকে অস্ত্র মামলায় ২০ বছর কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। বর্তমানে এ দম্পতি কারাগারে আছেন।