বিরোধীজোট ও স্বতন্ত্র ৪০ প্রার্থীর ভোট বর্জন

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ও সারাদেশে বিভিন্ন আসনে বিরোধীজোট ও স্বতন্ত্র ৪১ প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। রবিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়। এ সময় বিভিন্ন এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনার খবর পাওয়া যায়। এতে হতাহতের খবর দিয়েছেন প্রতিনিধিরা।

ঢাকা-১ আসনে মোটরগাড়ি প্রতীকের প্রার্থী সালমা ইসলামের ভোটবর্জন

ঢাকা -১ (দোহার) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোটরগাড়ি প্রতীকের অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। রবিবার সকাল আটটায় ভোটগ্রহণ শুরুর পর দুপুর ১২টার নবাবগঞ্জ উপজেলার কামারখোলার নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ ঘোষণা দেন।

সালমা ইসলাম অভিযোগ করেন, মোটরগাড়ি প্রতীকের এজেন্টদের প্রবেশে বাধা, ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। তাই নেতাকর্মীদের জান-মালের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। সেই সঙ্গে পুনরায় নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানান এই বর্তমান সংসদ সদস্য।

এই আসনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। এই আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আশা করছিলেন এলাকাবাসী। তার ওপর সালমা ইসলামকে বিএনপির মৌখিক সমর্থনের পর সেই সম্ভাবনা আরও বেশি করে দেখা যায়।

ফরিদপুর-২ আসনে বিএনপি প্রার্থী শামা ওবায়েদের ভোট বর্জন

ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা–শালথা) আসনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির প্রার্থী শামা ওবায়েদ ইসলাম। আজ রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি। শামা ওবায়েদ অভিযোগ করেন, ফরিদপুর-২ আসনের ১২৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১০০টি কেন্দ্রে শনিবার রাতেই ভোট দিয়ে দেওয়া হয়েছে। রবিবার সকালে যেসব কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে সেসব কেন্দ্রে বিএনপির কোনো পোলিং এজেন্টকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এর প্রতিবাদে নিজেও ভোট দেননি শামা ওবায়েদ ইসলাম।

এ বিষয়ে নগরকান্দার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. বদরুদ্দোজা বলেন, সংসদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা সম্পর্কে তিনি জানেন না। গতরাতে শামা ওবায়েদ একটি কেন্দ্রের বিষয়ে অভিযোগ করেছিলেন যে সেখানে ভোট কাটা হচ্ছে। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পাইনি।

নোয়াখালী-৪ আসনে বিএনপি প্রার্থীর নির্বাচন প্রত্যাখ্যান

নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনের বিএনপি প্রার্থী ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক এমপি মো. শাহজাহান নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে ভোট স্থগিত ও পুনঃনির্বাচনের দাবি জানান। রবিবার দুপুর ১২টায় তার মাইজদীস্থ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলন তিনি নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে অভিযোগ করে বলেছেন, সকাল ৭টার দিকে তার নিজ ভোট কেন্দ্র পৌর হাই স্কুলে যাবার পথে তার এজেন্টকে পুলিশ গ্রেফতার ও অন্য এজেন্টকে কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়নি। একই অবস্থা করেছে সব ভোটকেন্দ্রে এবং বিভিন্ন কেন্দ্রে আমার অনেক নেতা কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করে এবং আওয়ামী লীগ প্রার্থীর লোকজন আমার দলের অনেককে আহত করে।

তিনি আরও বলেন, সকাল সাড়ে ১০টায় আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা সামনে ককটেল ফাটিয়ে বাসায় হামলা করে জানালা ভাংচুর করে। এ পরিস্থিতে নিরাপত্তার জন্য আমি ও আমার স্ত্রী ভোট দিতে কেন্দ্রে যাইনি। এ অবস্থায় আমি মনে করি এখানে আজকের এ নির্বাচন জাল-চুরি ও নিকৃষ্ট নির্বাচন।

খুলনা-১ আসনে ভোট বর্জন জাপার সুনীল শুভ রায়ের

খুলনা-১ আসনে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির প্রার্থী দলের চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রেসসচিব সুনীল শুভ রায় ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, ‘সকাল থেকেই আমার এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তাদের ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে। ভোটারদের নৌকায় সিল দিতে বাধ্য করা হয়েছে। এখানে কোনো সুষ্ঠু ভোট হচ্ছে না। তাই আমি সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছি।’

এর আগে খুলনা-৫ আসনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন ধানের শীষের প্রার্থী ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি কেন্দ্রীয় জামায়াতের নায়েবে আমির। রবিবার সকাল ১০টায় তিনি ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।

অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার অভিযোগ করেন, ভোট গ্রহণ শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যে তার এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়। এ অবস্থায় নির্বাচন করা অসম্ভব। খুলনা- ৩,৪, ৫, ৬ আসনে ধানের শীষ প্রার্থীর ভোট বর্জন

খুলনা-১ (বটিয়াঘাটা-দাকোপ) আসনে আসনে মহাজোটের শরীক দল জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী সুনীল শুভ রায়, খুলনা-৩ (খালিশপুর-দৌলতপুর-খানজাহান আলী) আসনে বিএনপির প্রার্থী রকিবুল ইসলাম বকুল, খুলনা-৪ (রূপসা-দিঘলিয়া-তেরখাদা) আসনের বিএনপির প্রার্থী আজিজুল বারী হেলাল, খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসনের ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী জামায়াত নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ার, খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী জামায়াত নেতা মাওলানা আবুল কালাম আজাদ।

খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী জামায়াত নেতা অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ও খুলনা-৬ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী জামায়াত নেতা মওলানা আবুল কালাম ভোট বর্জন করেছেন।

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘ভোট গ্রহণের ১ ঘণ্টার মধ্যে খুলনা-৫ আসনের সকল ভোট কেন্দ্রের ভোট কক্ষের দরজা বন্ধ করে নৌকা প্রতীকে জাল ভোট দেওয়া হচ্ছে। শত শত ভোটারকে কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। বেশ কিছু নেতাকর্মীকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। এজেন্টের কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হয়নি। এ বিষয়ে সেনাবাহিনী, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে জানানো হলেও তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। যে কারণে এ প্রহসনের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালাম।’

একই অভিযোগে খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনের ২০ দলীয় ঐক্যজোট মনোনিত ধানের শীষের প্রার্থী জামায়াত নেতা মওলানা আবুল কালাম আজাদ ভোট বর্জন করেছেন। মওলানা আজাদ বর্তমানে কারাগারে আটক রয়েছেন। তার প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট অ্যাডভোকেট লিয়াকত আলী তার পক্ষে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।

তিনি অভিযোগ করেন, ‘এ রকম কলঙ্কিত ভোট আমি কোনো দিন দেখিনি। সকাল থেকেই আমার এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে। যারা ভোট দিতে যাচ্ছেন তাদেরকে ব্যালট পেপার টেবিলের ওপর রেখে নৌকায় সিল দিতে বাধ্য করা হয়েছে। এখানে কোনো সুষ্ঠু ভোট হচ্ছে না। তাই আমি সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছি।’

এদিকে, ইসলামাবাদ কলেজিয়েট স্কুল কেন্দ্রের ৬টি বুথের মধ্যে ৪টিতে বিএনপির এজেন্ট পাওয়া যায়নি। এছাড়া আরও বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে গিয়ে একই অবস্থা দেখা গেছে। এ কেন্দ্রের ৫নং বুথে ইভিএম মেশিন অকেজো দেখা গেছে। পোলিং কার্ড নষ্ট থাকায় সকাল থেকে ভোট গ্রহণ বন্ধ রয়েছে।

এ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা কিংকর সিংহ ১১টা ২ মিনিটে বলেন, ‘বিষয়টি রিটার্নিং অফিসারের মাধ্যমে ঢাকায় নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কার্ডটি হেলিকপ্টারে প্রেরণ করা হবে বলে ইসি থেকে জানানো হয়েছে।’

বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু অভিযোগ করেন, ‘নির্বাচনের আগের রাতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আমার এজেন্টদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কেন্দ্রে না যাওয়ার হুমকি দিয়েছে। পুলিশও একইভাবে এজেন্টদের গ্রেফতারের হুমকি দিয়েছে। ভয়ে অনেক এজেন্ট কেন্দ্রে যেতে পারেনি।’

খুলনা জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, ‘আমরা এ পর্যন্ত ২০টি কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা চোখে পড়েনি। এছাড়া ইভিএমএ মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিচ্ছেন। জেলার বাকি ৫টি আসনেও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ চলছে। আইন-শৃংখলা বাহিনী সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করছে।’

কুমিল্লা- ৩, ৫, ৬, ৯, ১০ এবং ১১ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী জামায়াত নেতার ভোট বর্জন

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লার ৫টি সংসদীয় আসনের ধানের শীষের ৫জন প্রার্থী ওইসব আসনে পুন:নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন এবং একজন প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। কেন্দ্র দখলসহ নানান অভিযোগ এনে কুমিল্লা-৩, ৫, ৬, ৯ ও ১০ আসনের বিএনপি দলীয় প্রার্থীরা ওইসব আসনে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন।

অন্যদিকে কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী জামায়াত নেতা ড. আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। রবিবার সকাল ১১টায় তিনি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।

ড. আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের নির্বাচন পরিচালক আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘ক্ষমতাসীনরা রাতে ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে রেখেছে। এ কারণে সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ভোট বর্জন করেছেন।’

ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে ভোটার, নেতাকর্মী এবং পোলিং এজেন্টদের বাধাসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। এই আসনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রেলমন্ত্রী মজিবুল হক।

পাবনা-৫ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী জামায়াত নেতার ভোট বর্জন

পাবনা-৫ (সদর) আসনে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ধানের শীষের প্রার্থী জামায়াত নেতা ইকবাল হুসাইন।

রবিবার দুপুর ১২টার দিকে সাংবাদিকদের ফোন করে নির্বাচন বর্জনের এ ঘোষণা দেন তিনি।

এদিকে, পাবনা-১ (বেড়া-সাঁথিয়া) আসনের বিভিন্ন কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে বিএনপির আট কর্মীকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

বাগেরহাট-৪ আসনে ধানের শীষ প্রার্থীর ভোট বর্জন

বাগেরহাট-৪ আসনের ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ধানের শীষের প্রার্থী ও জেলা জামায়াত নেতা আব্দুল আলীম। রবিবার দুপুর ১২টার দিকে তিনি এ ঘোষণা দেন।

ভোট বর্জনের কারণ হিসেবে এই জামায়াত নেতা জানান, কেন্দ্রে তার পক্ষের ভোটার প্রবেশ করতে না দেওয়া ও আওয়ামী লীগের এজেন্টদের সামনে ভোটারদের জোরপূর্বক ভোট দিতে বাধ্য করায় তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বগুড়া-৪ আসনে ভোট বর্জন করলেন হিরো আলম

এবার ভোট বর্জন করলেন বগুড়া-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল ইসলাম আলম ওরফে হিরো আলম। সকাল থেকেই নিজের নির্বাচনী এলাকা কাহালু ও নন্দীগ্রামের কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করেন তিনি। তবে পরবর্তীতে দুর্বৃত্তদের অতর্কিত হামলায় ক্ষিপ্ত হয়ে ভোট বর্জন করেন তিনি।

দুর্বৃত্তদের হামলার বিষয়ে হিরো আলম বলেন, আমাকে এতো ভয়ের কী আছে। আমি তো কারও ক্ষতি করিনি। জনগণ যদি আমাকে পছন্দ না করেন ভোট দিবেন না। সন্ত্রাসীরা কেন আক্রমণ করবে!’

আরও পড়ুন: আফগান সরকারের সঙ্গে আলোচনার খবর নাকচ তালেবানের

ভোট কেন্দ্র পরিদর্শনের সময় তার ওপর হামলার অভিযোগ এনে তিনি জানান যে, তিনি সকালে ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে হঠাৎ করেই একদম দুর্বৃত্ত তার ওপর হামলা করে, তাকে মারধর করে। এজন্যই তিনি ভোট বর্জন করেন।

তিনি আরও বলেন ‘আগেও বলেছি এখনো বলছি, চেহারা দেখে মানুষের বিচার করা যায় না। প্রতিভা আর ইচ্ছা শক্তিই সবকিছু। দুইবার নিজ এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছি। আমি মনে করি, এটা আমার বিজয়। এলাকার মানুষ আমাকে ভালোবাসে তার প্রমাণ পেয়েছি।’ একাদশ সংসদ নির্বাচনেও ভোটারদের ভালোবাসার প্রতিফলন ঘটাবে এবং আমাকে নির্বাচিত করবে বলেও আমার বিশ্বাস।’

ঢাকা-১৭ আসনে ভোট বর্জন করলেন আন্দালিব রহমান পার্থ

ভোট কারচুপি, কেন্দ্র দখল ও এজেন্টদের উপর হামলার অভিযোগ এসে ভোট বর্জন করলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ।

রবিবার রাজধানীর বারিধারায় নিজ বাসায় দুপুর পৌনে ২টায় এক সংবাদ সম্মেলনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘এ সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।’ পার্থ অভিযোগ করেন, ‘সন্ত্রাসীদের কর্তৃক ঢাকা-১৭ আসনের বিভিন্ন কেন্দ্রে বিএনপির এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে মারধর করে তাদের মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও তার এজেন্টদের ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘কালাচাঁদপুর হাইস্কুল ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী লীগের বাবুল কমিশনারের নেতৃত্বে বিএনপির এজেন্টদের ওপর হামলা, মারধর করা হয়েছে। এসময় তারা এজেন্টদের কাগজপত্র নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন তিনি।

উল্লেখ্য, আন্দালিব রহমান পার্থ ঢাকা-১৭ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী প্রতীকে লড়ছিলেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুক।

গাইবান্ধা-১ আসনে ধানের শীষ প্রার্থীর ভোট বর্জন

গাইবান্ধা-১ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মো. মাজেদুর রহমান ভোট বর্জন করেছেন। ওই আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী।

গাইবান্ধা-৪ আসনে জাতীয় পার্টির কাজী মশিউর রহমানের ভোট বর্জন

গাইবান্ধা-৪ আসনে জাতীয় পার্টির কাজী মশিউর রহমান ভোট বর্জন করেছেন। এ আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছেন আওয়ামী লীগের মনোয়ার হোসেন চৌধুরী।

সাতক্ষীরা-২ ও ৪ আসনে জামায়েত নেতার ভোট বর্জন

সাতক্ষীরা-২ আসনে মুহাম্মদ আবদুল খালেক ও সাতক্ষীরা-৪ আসনে জি এম নজরুল ইসলাম নির্বাচন বর্জন করেছেন। তাঁরা দু’জনেই জামায়াত নেতা, বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন।

বরিশাল-৪ আসনে ধানের শীষ প্রার্থীর ভোট বর্জন

বরিশাল-৪ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া নাগরিক ঐক্যের জে এম নুরুর রহমান জাহাঙ্গীর ভোট বর্জন করেন। তিনি অভিযোগ করেন, নিজ কেন্দ্রে বাধার মুখে ভোট দিতে পারেননি।

দিনাজপুর-৬ আসনে ধানের শীষ প্রার্থীর ভোট বর্জন

দিনাজপুর-৬ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া জেলা জামায়াতের আমির মো. আনোয়ারুল ইসলাম ভোট বর্জন করেছেন।

শরীয়তপুর-২ আসনে ধানের শীষ প্রার্থীর ভোট বর্জন

শরীয়তপুর-২ আসনে বিএনপির সফিকুর রহমান কিরণ ভোট বর্জন করেছেন।

শেরপুর-২ আসনের ঐক্যফন্ট প্রার্থীর ভোট বর্জন

রবিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শেরপুর ডিসি গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে ঐক্যফন্টের প্রার্থী (শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) প্রকৌশলী ফাহিম চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে ভোট বর্জনসহ তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।

ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে নির্বাচনের বিভিন্ন অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন করার সামগ্রিক পরিবেশ নাই বলে তিনি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।

রাজশাহী-৪ আসনে বিএনপি প্রার্থীর ভোট বর্জন

রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আবু হেনা ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। রবিবার দুপুরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এই ঘোষণা দেন।

নির্বাচন স্থগিতের দাবি জানিয়ে আবু হেনা বলেন, তার এলাকায় কেন্দ্র দখল করে জালভোটের উৎসব হয়েছে। নৌকার সমর্থকরা ধানের শীষের সমর্থকদের কেন্দ্রে ঢুকতে দিচ্ছে না। সাধারণ ভোটারদেরও জানমালের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। হানাহানি বন্ধে তিনি নির্বাচন বর্জন করছেন।

ময়মনসিংহ-৯ আসনে ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীর নির্বাচন বর্জন

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী, ময়মনসিংহ উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক খুররম খান চৌধুরী নির্বাচন বর্জন করেছেন। তিনি রবিবার (৩০ ডিসেম্বর) বেলা ১২টার দিকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। খুররম খান চৌধুরী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন। তাঁর সাথে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী বর্তমান এমপি আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন।

জয়পুরহাট-১ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর ভোট বর্জন

জয়পুরহাট-১ আসনে অধিকাংশ কেন্দ্রে এজেন্টকে বের করে দেওয়া, ব্যালট পেপার না থাকা ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভোটারদের তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ এনে বেলা সাড়ে ১২টায় নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন জাতীয় পার্টি (এরশাদ) প্রার্থী আসম মুক্তাদির তিতাস। বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমর্থিত বাসদের জেলা সমন্বয়ক অধ্যক্ষ ওয়াজেদ পারভেজ একই অভিযোগে বেলা সাড়ে ১২ টায় ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।

জয়পুরহাট-২ আসনের বিএনপি দলীয় প্রার্থীর ভোট বর্জন

জয়পুরহাট-২ আসনের বিএনপি দলীয় প্রার্থী আবু ইউসুফ মো. খলিলুর রহমান বেলা আড়াই টায় জয়পুরহাটের নিজ বাস ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভোট কেন্দ্র থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে এজেন্টকে বের করে দেওয়া, ভোট কারচুপি ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ না থাকার অভিযোগে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।

মানিকগঞ্জ-১ আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থীর ভোট বর্জন

মানিকগঞ্জ-১ (শিবালয়, ঘিওর-দৌলতপুর) আসনে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা অথচ নজীর বিহীন কারচুপি ও প্রহসনমূলক নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ ডাবলু। একই অভিযোগে নির্বাচন বয়কট করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ প্রার্থী আলহাজ্ব খোরশেদ আলম। এ দু’প্রার্থী ইত্তেফাককে জানান, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে নেতাকর্মীরা প্রায় প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে এজেন্টদের থাকতে না দিয়ে ইচ্ছামাফিক জাল ভোট দেয়। বেলা ১০-১১টার পর ভোটারদের বের করে দেওয়া হয়।

চাঁদপুর- ২, ৪ ও ৫ আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থীদের ভোট বর্জন

দুপুর থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত চাঁদপুর-২ আসনের বিএনপির প্রার্থী ড. জালাল উদ্দিন, চাঁদপুর-৪ আসনের বিএনপির প্রার্থী মো. হারুনুর রশিদ, চাঁদপুর-৫ আসনের বিএনপির প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক পৃথক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা নির্বাচন বর্জন করেছেন।

চট্টগ্রাম-৪ আসনে ধানের শীষ প্রার্থীর ভোট বর্জন

সীতাকুণ্ডে রাতে ব্যালেট বাক্সে ভর্তি, কেন্দ্রে হামলা, ভোট প্রদানে বাধা এবং কয়েকটি কেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণের কারণে উপজেলা বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে।

টাঙ্গাইল- ২ আসনের বিএনপি প্রার্থীর ভোট বর্জন

টাঙ্গাইল-২ আসনের বিএনপি প্রার্থী সুলতান সালাউদ্দিন টুকু নির্বাচনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। রবিবার দুপুর ১টার দিকে প্রার্থীর প্রধান এজেন্ট আবুল কালাম আজাদ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনসহ রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এসময় তিনি পুনঃনির্বাচনের দাবি করেন।

হবিগঞ্জ-৪ (মাধবপুর-চুনারুঘাট) আসনে ধানের শীষ প্রার্থীর ভোট বর্জন

পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া, ভোট কারচুপি ও জালিয়াতির অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া হবিগঞ্জ-৪ (মাধবপুর-চুনারুঘাট) আসনে খেলাফত মজলিশের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদের। ওই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য এডভোকেট মো. মাহবুব আলী।

আহমদ আব্দুল কাদের অভিযোগ করেন, নির্বাচন শুরুর প্রথম দুই ঘণ্টা সুষ্ঠুভাবে ভোট চললেও পরবর্তীতে এজেন্টদের কেন্দ্রে থেকে বের করে দেওয়া হয়, বাক্সে জাল ভোট পড়তে থাকে। ঘটনাগুলো রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অবহিত করার পরও কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় তিনি ভোট বর্জন করছেন।

সিরাজগঞ্জ-১, ২ ও ৪ আসনে ধানের শীষের প্রার্থীদের ভোট বর্জন

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের ধানের শীষ প্রতীকের সিরাজগঞ্জ-১ আসনের প্রার্থী কণ্ঠশিল্পী রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা, ২ আসনের প্রার্থী রুমানা মাহমুদ ও ৪ আসনের প্রার্থী মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান নির্বাচন বর্জন করেছেন। আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলা বিএনপির নির্বাচন সমন্বয়ক হারুন অর রশিদ খান হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ