জাতীয় ডেস্ক
ঢাকা, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫:
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ও সদস্যদের ওপর আগামীর বাংলাদেশ গঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বর্তাবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। সোমবার রাজধানীর ভাটারার আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর থানা আনসার কোম্পানি ও প্লাটুন সদস্যদের মৌলিক প্রশিক্ষণ কোর্সের (চতুর্থ ধাপ) সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
সিইসি নাসির উদ্দিন বলেন, নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্রগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আনসার বাহিনীর সদস্যরাই মূল শক্তি হিসেবে কাজ করেন। তারা অধিক সংখ্যায় নিয়োজিত থাকেন এবং তাদের দায়িত্বশীলতা নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, “আগামী নির্বাচনে যারা দায়িত্বে থাকবেন, তাদের ওপর আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণের দায়িত্ব এসে পড়েছে।”
প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানান, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে প্রায় ১০ লাখ কর্মকর্তা ও সদস্য নির্বাচনি কাজে নিয়োজিত থাকবেন। এর মধ্যে প্রিজাইডিং অফিসার, রিটার্নিং অফিসার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার কর্মীরা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন। সিইসি বলেন, “যারা নির্বাচনের ডিউটিতে থাকেন, সাধারণত তারা নিজেরাই ভোট দিতে পারেন না। এবার আমরা এমন উদ্যোগ নিয়েছি যাতে তারাও ভোট দিতে পারেন।”
তিনি আরও জানান, নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করা হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ওই অ্যাপে নিবন্ধন করলে তাদের বাড়ির ঠিকানায় ব্যালট পেপার পাঠানো হবে এবং নির্ধারিত নির্দেশিকা অনুযায়ী তারা ভোট প্রদান করতে পারবেন।
এছাড়া আইনি হেফাজতে থাকা ব্যক্তিদেরও ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানান সিইসি। তিনি বলেন, “যারা কারাগারে রয়েছেন, তারাও এই দেশের নাগরিক। তাদের ভোট দেওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করা হবে।” পাশাপাশি তিনি জানান, প্রবাসীরাও এবার ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, “আমি ভাবি—ভবিষ্যতের জন্য কেমন বাংলাদেশ রেখে যাবো, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ রাখতে পারবো কিনা। এটা আমার কাছে কেবল চাকরির দায়িত্ব নয়, বরং ব্যক্তিগতভাবে একটি মিশন এবং চ্যালেঞ্জ।”
তিনি আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনকে শুধু প্রচলিত নিয়মে কাজ করলে চলবে না, বরং প্রয়োজন হলে নতুন পথ তৈরি করে কাজ করতে হবে। “আমি গতানুগতিক ধারার কাজে বিশ্বাসী নই। দেশ এখন একটি সংকটময় অবস্থায় রয়েছে, তাই আউট অব দ্য ওয়ে গিয়ে কাজ করতে হবে,”—যোগ করেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব প্রতিরোধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান সিইসি। তিনি বলেন, “সত্যতা যাচাই না করে কোনো তথ্য শেয়ার করবেন না। ইসিতে একটি যাচাই সেল খোলা হয়েছে, যেখান থেকে যেকোনো তথ্য যাচাই করা যাবে।”
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষণার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।