জাতীয় ডেস্ক
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আজ মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল ছয়টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন। তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়া মাত্রই রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও আইনগত বিভিন্ন ক্ষেত্রের ব্যক্তিত্ব এবং সাধারণ মানুষ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল মঙ্গলবার রাত পৌনে ৯টার দিকে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জানান, সকল প্রতিকূলতা সত্ত্বেও খালেদা জিয়া বাংলাদেশে থাকাকালীন জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন। তিনি বলেন, “আজ বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত হৃদয়বিদারক একটা দিন। বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, গণতন্ত্রের অগ্রনায়ক বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য, গণতন্ত্রের উন্নয়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। সকল প্রতিকূলতা সত্ত্বেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, অসীম নির্যাতনের মুখোমুখি হয়েও তিনি বাংলাদেশে থেকেছেন। কখনো মাথা নত করেননি।”
আইন উপদেষ্টা আরও উল্লেখ করেন, “আমি শোক বইয়ে স্বাক্ষর ও শোকগাথা লিখতে গিয়ে কিছু লিখতে পারিনি। শোকে ভেঙে পড়েছি। মনে হচ্ছে আজ বাংলাদেশ এতিম হয়ে গেছে। অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেছে।” তিনি বলেছিলেন, দেশের মানুষ যেভাবে খালেদা জিয়াকে ভালোবাসে এবং সম্মান করে, তা একটি সান্ত্বনার বিষয়।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেন, “খালেদা জিয়া যে স্বাধীন, সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক ও মানুষের অধিকারের বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন, সকলের সম্মিলিত শক্তিতে আমরা সেটি গড়ে তুলতে চেষ্টা করব। আমরা সেটির দ্বারপ্রান্তে আছি।”
সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, “১৯৭২ থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের গণতন্ত্রের সংগ্রামের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র বেগম খালেদা জিয়া। তিনি ছিলেন সৌন্দর্য ও বেদনার এক বিরল সংমিশ্রণ। তিনি কেন সবার থেকে আলাদা, ৫ আগস্ট হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর তাঁর বক্তব্যে শুনলে বোঝা যায়।”
গুলশান কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তারা শোক বইয়ে স্বাক্ষর করে এবং বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জানাজা আগামীকাল বুধবার বাদ জোহর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা ও সংলগ্ন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তাঁকে তাঁর স্বামী, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে দাফন করা হবে।
খালেদা জিয়ার মৃত্যু বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। দীর্ঘ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রতি তাঁর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।