আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ পয়েন্টের শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি আশা প্রকাশ করেছেন, আগামী জানুয়ারি মাসে কিয়েভ ও মস্কো তা স্বাক্ষর করতে পারে। বুধবার এক ঘোষণায় জেলেনস্কি বলেন, তিনি ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের সঙ্গে সাম্প্রতিক বৈঠক সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন এবং এটি রাশিয়া, ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে ঐকমত্যের পথ সুগম করবে।
জেলেনস্কি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা (সিকিউরিটি গ্যারান্টি) চাওয়ার বিষয়টি আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার ৫ নম্বর পয়েন্ট অনুযায়ী, আগামী ১৫ বছর ইউক্রেনকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়া হবে। তবে জেলেনস্কি চাইছেন, এই মেয়াদ ১৫ বছর থেকে ৫০ বছরে বৃদ্ধি করা হোক। এই বিষয়ে কিয়েভ ও ওয়াশিংটন কর্মকর্তাদের মধ্যে চলমান আলোচনা চলছে।
নিরাপত্তার বিষয়টি আরও নিশ্চিত করতে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের পর কেবল মার্কিন সেনাবাহিনীই ইউক্রেনে অবস্থান করবে বলে জানিয়েছেন জেলেনস্কি। এছাড়াও, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ইউক্রেনকে প্রদান করবে।
জেলেনস্কি মঙ্গলবারের ভাষণে যুদ্ধ পরবর্তী পুনর্গঠনকেও গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, ট্রাম্প যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের পুনর্গঠনকে গুরুত্ব দিচ্ছেন এবং যুদ্ধবিরতি পরবর্তী সময়ে মার্কিন ও ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো ইউক্রেনে পুনর্গঠন ও অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ করবে। তিনি আরও বলেন, লক্ষ্য হলো নাগরিকদের গড় মজুরি বা আয় বৃদ্ধি করা, এবং এই বিষয়ে ট্রাম্পের সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এই শান্তি পরিকল্পনা সফল হলে, এটি রাশিয়া-ইউক্রেন দীর্ঘকালীন সংঘাত সমাধানে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, বিনিয়োগ ও পুনর্গঠন সংক্রান্ত বিষয়গুলো প্রক্রিয়াগত ও রাজনৈতিক আলোচনা চালু রয়েছে এবং চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের আগে সব পক্ষের সমন্বয় ও শর্তাবলীর সমাধান অপরিহার্য।
জেলেনস্কির বক্তব্য অনুযায়ী, এই পরিকল্পনা কেবল যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনকে শান্তি প্রদানই নয়, বরং দেশের অর্থনৈতিক ও নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। ইউক্রেনের সরকারি কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেছেন, জানুয়ারির মধ্যেই সকল পারিপার্শ্বিক বিষয় সমাধান করে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।