আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ১২ বছর আগের ঋণগ্রস্থ বাংলাদেশ এখন ঋণ সহায়তার এক অভূতপূর্ব সাফল্যের দেশ। বিশ্ব আজ অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের দিকে।
আজ রোববার ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলেছে এটাই বিএনপির গাত্রদাহ। ১২ বছর আগের ঋণগ্রস্থ বাংলাদেশ আজ ঋণদাতা বাংলাদেশ। শ্রীলংকা ও সুদানকে আমরা ঋণ দিয়েছি। ব্এিনপি এসব দেখতে পায় না। বিশ্ব আজ অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের দিকে।’
তিনি বলেন, নানান প্রতিকূলতা পেরিয়ে বাংলাদেশ আজ এক প্রত্যয়ী এবং সম্ভাবনাময় দীপ্যমান দেশ। অর্থনীতির প্রতিটি সূচকে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ আজ মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। চলমান মেগা প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হলে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারা আরও বাড়বে, বাড়বে সমৃদ্ধি।
আওয়ামী লীগকে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করতে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়েছে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচনের আর বেশী দেরি নেই, আর মাত্র দুই বছর বাকি আছে। দলকে দ্বন্দ্ব কোন্দল মুক্ত করে সামনের নির্বাচনে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। দলের মধ্যে সুদৃঢ় ঐক্য ফিরিয়ে আনতে হবে। পার্টিকে শক্তিশালী করতে হলে প্রয়োজন স্পাত কঠিন ঐক্য।’
দলের শৃঙ্খলার ব্যাপারে শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থানে রয়েছেন জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা থেকে সম্মেলন করে নতুন কমিটি দিতে হবে। এর পর জেলা সম্মেলন করতে হবে। পকেট কমিটি করা যাবে না। করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গ চলছে। প্রয়োজনে ঘরোয়াভাবে সম্মলন করে কমিটি দিতে হবে।
তিনি বলেন, নিজের অবস্থান শক্ত করার জন্য পকেট কমিটি করা যাবে না। কর্মীরা কোণঠাসা হয়ে গেলে আওয়ামীলীগ কোনঠাসা হয়ে যাবে। চি্িহ্নত সন্ত্রাসী, দুনীতিবাজ, সাম্প্রদায়িক, মাদক ব্যবসায়ি এদেরকে দলে ও কমিটিতে নেওয়া যাবে না। দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা করা যাবে না। এ সব ব্যাপারে শেখ হাসিনা কঠোর অবস্থানে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এদেশে লুটপাট তন্ত্র চালু করেছিল বিএনপি। হাওয়া ভবনের নামে খাওয়া ভবন চালু করে লুটপাট তন্ত্র চালু করেছিলো। কোনো দুনীতির বিচার হতো না। কোনো নেতা, কোনো কর্মীকে শাস্তির আওতায় আনা হতো না। এই ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু কন্যা জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে চলছেন। আমাদের দলের অনেকের সাজা হয়েছে, অনেকে জেলে আছে, দুদক তদন্ত করছে। বিএনপির সময় এটা ভাবাই যেতো না।
জিয়াউর রহমানকে খলনায়ক বানানোর চেষ্ট হচ্ছে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলগমীরের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বস্তুত পক্ষে আওয়ামী লীগ না, জিয়াউর রহামন তার কর্মেই ইতিহাসের খলনায়ক। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার বেনিফিসিয়ারি জিয়াউর রহমান। বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে বহুদলীয় তামাশার প্রচলন করেছিলো বিএনপি।
করোনা ভাইরাসের ব্যপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, করোনা ভাইরাসের আবারও বিস্তার ঘটছে। সবাইকে এ ব্যপারে সতর্ক থাকতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে। অনেকে থুতনির কাছে মাস্ক পড়ে থাকেন। এভাবে মাস্ক পড়ে লাভ কি, লাভ নেই। ভালোভাবে মাস্ক পড়তে হবে। করোনা কবে যাবে সেটা আমরা কেউই বলতে পারছি না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতে ভালো থাকা যায় সেটাই সবাইকে করতে হবে।
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমদের সভাপতিত্বে বর্ধিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আবদুল মান্নান খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাহবুবুর রহমান ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ।