তালেবান বিদ্রোহীরা আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে প্রবেশ করার পর প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি তাজিকিস্তানের উদ্দেশে শহর ত্যাগ করেছেন বলে এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে খবর প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন ওই কর্মকর্তা বলেন, প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি তাজিকিস্তানে চলে গেছেন।নিরাপত্তাজনিত কারণে প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এ ব্যাপারে কিছুই বলছে না বলেও জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
অন্যদিকে তালেবানের একজন প্রতিনিধি এ ব্যাপারে বলেন, আশরাফ গনি কোথায় আছেন সে বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, রোববার তালেবান যোদ্ধারা চারদিক থেকে রাজধানীতে প্রবেশ করেছে।
তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ জানান, তারা শহরের উপকণ্ঠে অপেক্ষা করছেন এবং শান্তিপূর্ণ আত্মসমর্পণের জন্য পশ্চিমা সমর্থিত সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
এর আগে বিভিন্ন গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, কাবুলে হামলা করবে না—এমন শর্তে সমঝোতা হয়েছে তালেবান বাহিনীর সঙ্গে।
রোববার চারদিক থেকে তালেবানরা রাজধানী কাবুলে ঢুকে পড়ছে—এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি আমেরিকা ও ন্যাটোর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেন।
এরপরই ক্ষমতার শান্তিপূর্ণ হস্তান্তরে রাজি হয় আফগান সরকার। শুরু হয় অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রক্রিয়া। প্রেসিডেন্টের বাসভবনে অনুষ্ঠিত ৪৫ মিনিটের বৈঠকে নেতৃত্ব দেন তালেবান প্রধান মোল্লা আবদুল গনি বরাদর। কাতার এবং আমেরিকার কূটনীতিবিদরাও সেখানে ছিলেন।
আর অন্তর্বতী সরকারের প্রধান হিসেবে নাম এসেছে দেশটির সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী আহমদ জালালির। কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এর আগে তালেবানের মুখপাত্র সোহাইল শাহীন বলেন, দর কষাকষি চলছে। খেয়াল রাখা হচ্ছে সাধারণ মানুষ যেন হিংসার বলি না হন। তিনি জানান, তালেবানরা কাবুলে ঢোকেনি। তাদের শহরের বাইরে অবস্থান নিতে বলা হয়েছিল। তারা শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরে আফগান সরকারের সহযোগিতার অপেক্ষা করছিলেন।
এ বছরের ৯ মার্চ আফগানিস্তান থেকে সেনা সদস্যদের সরিয়ে নিতে শুরু করে আমেরিকা। এরপরই আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে তালেবান বাহিনী। জুন মাসের শেষ দিকে আফগান বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে তাদের। এরপরই দেশের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে এগুতে শুরু করে তারা। বলা যায়, দেড় মাসের মধ্যেই আফগানিস্তানের দখল নিল তারা।