রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের মামলায় এখতিয়ারবহির্ভুত পর্যবেক্ষণ দিয়ে সমালোচিত ঢাকার সাবেক নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোছা. কামরুন্নাহার অসৎ উদ্দেশ্যে ধর্ষণ মামলার আসামিকে জামিন দিয়েছিলেন উল্লেখ করে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন আপিল বিভাগ।
বুধবার রাতে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের দেওয়া ছয় পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। এর আগে গত ২২ নবেম্বর উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ সত্ত্বেও ধর্ষণ মামলায় আসামিকে জামিন দেওয়ার ঘটনায় বিচারক কামরুনন্নাহার আপিল বিভাগে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চান। যদিও প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী রূদ্ধদ্বার শুনানিতে কোনো সাংবাদিককে আপিল বিভাগে থাকতে দেওয়া হয়নি। এমনকি আপিল বিভাগের কর্মচারীদেরও বিচার কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়।
পরে ওইদিন বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, আপিল বিভাগ বিচারক কামারুন্নাহারের ফৌজদারি বিচারিক ক্ষমতা সিজ করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার বিচারপতির স্বাক্ষর শেষে পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশ করা হয়।
এর আগে মোছা. কামরুন্নাহার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক হিসেবে গত ১১ নবেম্বর রাজধানীর বনানীর রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার রায় দেন।
রায়ে পাঁচ আসামির সবাইকে খালাস দেওয়া হয়। তবে খালাস নিয়ে যতটা আলোচনা তার চেয়ে বেশি সমালোচনা দেখা দেয় বিচারক কামরুন্নাহারের পর্যবেক্ষণ নিয়ে। তিনি পর্যবেক্ষণে বলেন, ধর্ষণের অভিযোগের ক্ষেত্রে ঘটনার ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলে পুলিশ যেন মামলা না নেয়। বিচারকের এমন পর্যবেক্ষণ নিয়ে সেদিন থেকেই সংক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মীসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক এবং নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
এ ঘটনায় গত ১৪ নবেম্বর বিচারক মোছা. কামরুন্নাহারকে বিচারিক দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়।