বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে দৃশ্যমান কোনও অগ্রগতি হচ্ছে না বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে চুক্তি সই হয়েছে। দু্ই দেশের মন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠকসহ আমরা বেশ কিছু উদ্যোগও নিয়েছি। কিন্তু, বাস্তবে কোনও অগ্রগতি হচ্ছে না।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব সলিল শেঠি গণভবনে সৌজন্যে সাক্ষাতে গেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব এহসানুল করিম প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
এখন পর্যন্ত প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশ আশ্রয় নিয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। সরকার রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার বিষয়েও বিশেষ নজর রেখেছে।’
সৌজন্যে সাক্ষাতে সলিল শেঠি জানান, রোহিঙ্গারা যাতে দেশে ফিরে যেতে পারে, সেজন্য অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের তাদের কাজ অব্যাহত রেখেছে।’
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যা হয়েছে, তা অপরাধ। রোহিঙ্গাদের বিষয়ে বিশ্বজুড়ে জনমত সৃষ্টি করতে হবে।’
এইসময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব নজিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে গত বছরের ২৩ নভেম্বর সম্মতিপত্রে সই করে দুই দেশ।
বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সু চির পক্ষে তার দপ্তরের মন্ত্রী কিয়া তিন্ত সোয়ে এ বিষয়ে একটি সম্মতিপত্রে (অ্যারেঞ্জমেন্ট) সই করেন।
উল্লেখ, সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে পালিয়ে আসা চার লাখের মত রোহিঙ্গা গত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে। আর গত ২৫ অগাস্ট রাখাইনে নতুন করে দমন অভিযান শুরুর পর আরও সোয়া ছয় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের সীমান্তে প্রবেশ করেছি।
জাতিসংঘ ওই অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ বলে আখ্যায়তি করেছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই রোহিঙ্গা সঙ্কটকে এশিয়ার এ অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় শরণার্থী সমস্যা হিসেবে দেখা হচ্ছে।