খালেদা জিয়াকে ‍মুক্তিযোদ্ধা দাবি ‘আষাঢ়ে গল্প’র মতো : ওবায়দুল কাদের

খালেদা জিয়াকে ‍মুক্তিযোদ্ধা দাবি ‘আষাঢ়ে গল্প’র মতো : ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তিযোদ্ধা আখ্যা দিয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম প্রকৃতপক্ষে একাত্তরের রণাঙ্গনে অংশ নেয়া বীর নারীদের গৌরবগাঁথা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের প্রতি কটাক্ষ করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন।

তিনি বলেন, “চিরাচরিত মিথ্যাচারের অপরাজনীতিতে নিমগ্ন বিএনপি নেতারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রতিনিয়ত অপপ্রচারের আশ্রয় নিচ্ছেন। বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম বেগম খালেদা জিয়াকে নারী মুক্তিযোদ্ধা আখ্যায়িত করে যে বক্তব্য দিয়েছে, তা বাংলা সাহিত্যের ‘আষাঢ়ে গল্প’র মতো।”

শনিবার গণমাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেছেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুল খালেদা জিয়াকে মুক্তিযোদ্ধা আখ্যা দিয়ে প্রকৃতপক্ষে একাত্তরের রণাঙ্গনে অংশ নেয়া বীর নারীদের গৌরবগাঁথা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগের প্রতি কটাক্ষ করার অপচেষ্টা চালিয়েছেন।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তিই বিএনপি’র শক্তির একমাত্র উৎস।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা আশা করি, বিএনপি নেতারা এ ধরনের বানোয়াট গল্প থেকে বিরত থাকবেন। তাদের বোধোদয় হওয়া উচিত যে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির মতো ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও জাতিদ্রোহিমূলক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার কারণেই বিএনপি জনগণ দ্বারা বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলামসহ বিএনপি নেতারা বিদেশে অর্থ পাচারের কথা বলেছেন। দেশবাসী জানেন, এই অর্থপাচারের মূল হোতা কারা এবং হাওয়া ভবন সৃষ্টি করে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। দুর্নীতিতে বারবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ও অর্থপাচারকারীদের দল বিএনপি নেতাদের মুখে অর্থপাচারের কথা ভূতের মুখে রাম নাম ছাড়া আর কিছু নয়।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির শাসনামলে জার্মানির প্রযুক্তি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিমেন্স গ্রুপের কাছ থেকে তারেক রহমানের ঘুষ গ্রহণের কথা আদালতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই’র সাক্ষ্যে প্রমাণিত হয়েছে। একই সাথে চীনের হার্বিন কোম্পানির কাছ থেকে তারেক রহমানের ঘুষ কেলেঙ্কারির কথা সকলেই জানে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও জিয়া পরিবারের দুর্নীতির চিত্র বিস্তারিতভাবে প্রকাশিত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সিঙ্গাপুর থেকে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র কোকো রহমানের পাচারকৃত অর্থ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই দেশে ফেরত আনা হয়েছে। বিএনপি নেতারা মুখে একদিকে অর্থপাচারের কথা বলে অন্যদিকে লন্ডনে অবস্থানরত তাদের নেতা সাজাপ্রাপ্ত পলাতক খুনি আসামি তারেক রহমানের বিলাসী জীবন-যাপনের রসদ প্রেরণ করে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশের জনগণ জানে, বিএনপি’র সাজাপ্রাপ্ত নেতা, একাত্তরের পরাজিত অপশক্তি ও যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা, সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে লবিস্ট নিয়োগে এবং বিএনপি’র মনোনয়ন ও পদ বাণিজ্যের হাজার হাজার কোটি টাকা দেশ থেকে কারা পাচার করছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে আর্থ-সামাজিক সকল সূচকেই বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে। জনগণের জীবনমানের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। দেশের টাকা দেশে আছে বলেই উত্তরোত্তর বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা ও সুশাসন আছে বলেই মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’

তিনি বলেন, বৈশ্বিক মহামারী করোনার ভয়াবহ অভিঘাতের মধ্যেও দেশের অর্থনীতির গতি সচল রয়েছে। আইএমএফসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক কাঠামো বিনির্মাণ এবং অগ্রগতির প্রশংসা করছে।

অসংলগ্ন কথাবার্তা পরিহার করে এবং সত্যকে স্বীকার করার সৎ সাহস নিয়ে গঠনমূলক বক্তব্য প্রদান করতে বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সড়ক পরিবহন ওসেতুমন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধি এবং আগামী অর্থবছরে ৭ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়াবে বলে সাম্প্রতিক সময়ে পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমএফ। অথচ বিশ্বসভায় উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃত বাংলাদেশের কোনো উন্নয়নই বিএনপি নেতাদের চোখে পড়ে না।

সূত্র : বাসস

জাতীয় রাজনীতি