ডিসেম্বর ১৬,১৯৭১। বাঙ্গালির বিজয়সূর্য দেখা দিয়েছে। এক মাস পর পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে দেশে ফিরলেন বঙ্গবন্ধু। ব্যস্ত হয়ে পড়লেন সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ পুনঃর্গঠনে। এক দিকে সংবিধান প্রণয়ণ, মন্ত্রীসভা গঠন, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র সমর্পণ, ভারতীয় সেনা বিদায়, ঘাতক-দালালদের বিচারের মত গুরুত্বপূর্ণ সব রাজনৈতিক কাজ। এদিকে গোকুলে বাড়ছে শত্রুর সম্ভার। মানুষ ছাড়া পোড়া মাটি চেয়েছিল পরাজিত পাকিস্তান। পরাজয়ের পরও সে আশা ছাড়েনি তারা। বাস্তবায়নে যোগ দেয় মসনদের ক্ষমতালোভী ষড়যন্ত্রকারীরা। স্বাধীনতার মহানায়ককে সরিয়ে দিয়ে বাংলাদেশকে আবারো গোলাম বানানোর নীলনকশায় মেতে ওঠে তারা। কিছু কাছের মানুষই যে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলবে তা কখনো কল্পনাও করেননি জাতির পিতা। তাই বারবার সাবধান করার পরও কর্মে আর চিত্তে এতটুকু ফাটল ধরেনি অমিত সাহসী বঙ্গবন্ধুর। অবশেষে জাতিকে স্তম্ভিত করা সেই কালরাত্রি।
১৫ আগস্টের প্রথম প্রহরেই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানের রক্তে রঞ্জিত সদ্য স্বাধীন দেশের মাটি। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে শেকড় থেকে উপড়ে ফেলতে হত্যা করা হয় পুরো পরিবার ও স্বজনদের। এই আগস্টেই জাতির কলঙ্কিত এক অধ্যায়ের সূচনা ঘটেছিল। ১৯৭৫ সালের আগস্টের মধ্যভাগে নৃশংসভাবে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ইতিহাসের এই মহানায়কের বুকের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল বাংলার মাটি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে সপরিবারে জাতির পিতা হত্যার সঙ্গে একাত্তরের পরাজিত শত্রুদের কূট ষড়যন্ত্র আর হামলার শিকার হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের মহান আদর্শ এবং চেতনাও।
এই বিশাল ব্যক্তিত্ব শুধু একজন জাতীয় নেতাই ছিলেন না, তিনি ছিলেন ইতিহাসের এক মহানায়কও। যে কারণে ২০০৪ সালে বিবিসি এক বিশ্বজরিপে তাঁকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৪৭-এ ভারত বিভাগ পরবর্তী পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতির প্রাথমিক পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন ছাত্রনেতা। ক্রমে তিনি আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতৃত্বের উচ্চপদে আসীন হয়েছিলেন। তুখোড় বক্তৃতা দেওয়ার ক্ষমতা ছিল তাঁর বড় গুণ। কোনো জনসভায় দর্শক-শ্রোতার এমন তুমুল করতালি পাওয়া নেতা ওইকালে তেমন একটা ছিলো না। আজও নেই। ১৯৭২ সালে নিউইয়র্ক টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ডেভিড ফ্রস্ট কর্তৃক ধানমণ্ডির ৩২ নং বাড়িতে গৃহীত সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধু এই বিষয়ে বলেছিলেন, পাকিস্তানি ফৌজ আমার সবকিছু লুণ্ঠন করেছে। তাতে আমার দুঃখ নাই। আমার দুঃখ, ওরা আমার জীবনের ইতিহাসকেও লুণ্ঠন করেছে।
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন মূলত শুরু হয়েছিল ১৯৩৯ সালে মিশনারি স্কুলে পড়ার সময় থেকেই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ১৯৪০ সালে নিখিল ভারত মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে যোগ দেন। ১৯৪২ সনে এন্ট্রান্স পাস করার পর কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে আইন পড়ার জন্য ভর্তি হন। ১৯৪৩ সালে তিনি বেঙ্গল মুসলিম লীগে যোগ দেন এবং কাশ্মিরী বংশে জন্মগ্রহণকারী বাঙালি মুসলিম অগ্রণী নেতা হুসেইন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে আসেন। ১৯৪৩ সালে তিনি বঙ্গীয় মুসলিম লীগের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। ১৯৪৭ সনে অর্থাৎ দেশবিভাগের বছর মুজিব কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইসলামিয়া কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন। ভারত ও পাকিস্তান পৃথক হওয়ার সময়ে কলকাতায় ভয়ানক হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা হয়। এসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মুসলিমদের রক্ষা এবং দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সোহরাওয়ার্দীর সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক তৎপরতায় শরিক হন।
পাকিস্তান-ভারত পৃথক হয়ে যাওয়ার পর শেখ মুজিব পূর্ব পাকিস্তান ফিরে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৪৮ সালের জানুয়ারির ৪ তারিখে প্রতিষ্ঠা করেন পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্র লীগ যার মাধ্যমে তিনি উক্ত প্রদেশের অন্যতম প্রধান ছাত্রনেতায় পরিণত হন। বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি নিয়ে প্রতিষ্ঠিত আন্দোলনে অংশ নেওয়ার মাধ্যমেই শেখ মুজিবের রাজনৈতিক তৎপরতার সূচনা ঘটে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ প্রাদেশিক আইনসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। এরপরও নানা বিষয়ে পশ্চিম পাকিস্তানিরা নানা টালবাহানা চালাতে থাকে। অতঃপর ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানের এক জনসভায় বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার সেই কালজয়ী ভাষণ দেন এবং জনগণকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত করেন। মূলত:এই ভাষণই বাঙালিকে চূড়ান্ত মুক্তির পথে পরিচালিত করে।
ইয়াহিয়া খান তখন সামরিক আইন জারি করেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন এবং মুজিবসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতাদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী রাজনৈতিক ও জনসাধারণের অসন্তোষ দমনে ২৫ মার্চ অপারেশন সার্চলাইট শুরু করে। সামরিক বাহিনীর অভিযান শুরু হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ-ভারত যৌথ বাহিনীর কাছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণ করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নামে স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা ঘটে। পাকিস্তান শাসকবৃন্দ বঙ্গবন্ধুকে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি মুক্তি দেয়। এরপর তিনি লন্ডন হয়ে নতুন দিল্লীতে ফিরে আসেন এবং ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে সাক্ষাতের পর জনসমক্ষে বলেন, ভারতের জনগণ, আমার জনগণের শ্রেষ্ঠবন্ধু। বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশে ফিরে আসেন। সেদিন তিনি ঢাকায় জড়ো হওয়া প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের সামনে বক্তৃতা দেন এবং বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতি থেকে প্রধানমন্ত্রী হন। মাত্র ১০ মাসের মধ্যে একই বছরের ৪ নভেম্বর ২২৫ বছরের পরাধীনতার পর গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে ভিত্তি করে প্রণীত সংবিধান বাংলা দেশের গণপরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়। যা বঙ্গবন্ধুর বিচক্ষণ নেতৃত্ব ও আন্তরিক প্রচেষ্টা ছাড়া কখনোই সম্ভব ছিলো না। সেই মূলনীতি অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনার পাশাপাশি দেশের অথনৈতিক ভিত শক্ত করার কাজে মনোনিবেশ করেন তিনি। একইসঙ্গে স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরে বিশ্বের প্রায় ২০০ দেশের স্বীকৃতি আদায় করেন। সেইসাথে জাতিসংঘ, জোট নিরপেক্ষ সংস্থা, কমনওয়েলথ, ওআইসি,এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক, আইএমএফ, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা, বিশ্ব খাদ্য পরিষদসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করেন। ১৯৭৩ সালের ২৩ মে বঙ্গবন্ধুকে বিশ্বশান্তি পরিষদ জুরিও কুরি পদকে ভূষিত করে। আর এভাবেই টুঙ্গিপাড়ার এক সাধারণ সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান শেখ মুজিব ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন বঙ্গবন্ধু ও জাতির পিতা থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের সর্বাধিনায়ক।
আজ যে বাংলাদেশে আমরা মুক্তির স্বাদ নিচ্ছি, স্বাধীনতার লাল-সবুজ পতাকা উড়াচ্ছি তা বঙ্গবন্ধু না হলে সম্ভব হতো না। তিনি প্রায়ই বলতেন শহীদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না। প্রয়োজন হলে নিজের রক্ত দিয়ে শহীদের রক্তের ঋণ শোধ করে যাব। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের কিছু কুচক্রী মহল তখনো চাইছে দেশটি স্বাধীন হিসেবে না থাকুক অথবা তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত হোক। এত কিছুর পরও এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি ৭৮৬ কোটি টাকার বাজেট থেকে ১০৮৪.৩৭ কোটি টাকার বাজেট প্রদান করেছেন।
শুরু হয়দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক চক্রান্ত। দেশের ভেতরে এক ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করা হয়। আন্তর্জাতিকভাবে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ তৈরি করার চেষ্টা করা হয়। এসব বিষয় পর্যবেক্ষণ করে বঙ্গবন্ধু বুঝতে পারলেন যে দেশে এই অবস্থা চলতে থাকলে বাংলাদেশকে আমি যে লক্ষ্যে নিয়ে যেতে চাই সেই লক্ষ্যে নিয়ে যেতে পারব না। তাতে অনেক সময় লেগে যাবে। তখন তিনি ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি আমাদের মাঝে দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক দিলেন। এই দ্বিতীয় বিপ্লবের মাধ্যমেও বঙ্গবন্ধু তাঁর নতুন কতগুলো আদর্শ আমাদের মাঝে দিয়ে গেছেন। এই দ্বিতীয় বিপ্লবে তিনি চেয়েছিলেন দুর্নীতিমুক্ত সমাজ, কৃষি এবং শিল্পের উৎপাদন বৃদ্ধি, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, জাতীয় ঐক্য এবং জনগণকে একটি জনমুখী প্রশাসন ব্যবস্থা উপহার দেয়া। জাতির পিতার দ্বিতীয় বিপ্লবের ধারাবাহিকতায় আমরা দেখতে পাচ্ছি জাতির পিতার সেই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ফলে আজকে বাংলাদেশের জনসংখ্যা পাকিস্তানের থেকে কম। জাতির পিতার রাজনৈতিক পরিবেশের মধ্য দিয়ে নিজেকে তৈরি করা এবং বাঙালি জাতির অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক মুক্তি, নিজস্ব ভূমিসত্তা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমাদের মাঝে রেখে গেছেন। যা তিনি ছাত্রজীবন থেকে শুরু করেছেন। তাঁর জীবনে জনগণই ছিল অন্তঃপ্রাণ।
অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য-এই মৌলিক অধিকার গুলো পূরণের মাধ্যমে বাংলার মানুষের উন্নত জীবন প্রতিষ্ঠাই ছিল তার আদর্শ। বাঙালি জাতির অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক এবং বাঙালি জাতি যেন একটি শোষণমুক্ত একটি সমাজ ব্যবস্থায় বসবাস করতে পারেন এটাই তাঁর সারা জীবনের স্বপ্ন। এই স্বপ্নই হচ্ছে আদর্শের বহিঃপ্রকাশ। তার অন্যতম ছিল বাঙালি জাতির একটি নিজস্ব ভূমিসত্তা, যে ভূমিতে বাঙালি তার নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারবে, তার নীতি সে নিজেই পরিচালনা করতে পারবে এবং বাঙালির সংস্কৃতি সে নিজেই পরিচালনা করবে। জনগণকে অর্থনৈতিক মুক্তি দেয়া, জনগণকে ক্ষমতায়ন করা, ধর্মনিরপেক্ষ থাকা, মানুষের জন্য কাজ করা, নিঃস্বার্থভাবে মানুষের জন্য নিজের বিলিয়ে দেয়া জাতির পিতার অন্যতম আদর্শ। যে কারণে তিনি জনগণের দাবি আদায়ের জন্য এক আদর্শবাদী ও আত্মত্যাগী নেতা হিসেবে আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হলে পশ্চিম পাকিস্তানিরা বাঙালি জাতির ওপর শোষণ, জুলুম, নির্যাতন আর নিপীড়ন চালাতে থাকে। বঙ্গবন্ধু এর শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করার লক্ষ্যে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরের বছরই ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করেন। এই দুটি সংগঠনের মাধ্যমে বাঙালি জাতির পিতা ৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২-এর শিক্ষা কমিশন আন্দোলন, ৬৬-এর ঐতিহাসিক ছয় দফা উপস্থাপন, ৬৮-এর আগরতলা মামলা প্রতিহতকরণ, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান-এসবই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন। সেই ধারাবাহিকতায় এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক মুক্তি ও স্বাধীনতার লক্ষ্যে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধু এক ঐতিহাসিক, অবিস্মরণীয় ভাষণ প্রদান করেন। সেই ভাষণে শান্তির ডাক দিয়েছেন, যার মাধ্যমে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে শুরু হয় সংগ্রাম ।
১৯৭১ সালে ২৫ মার্চের মধ্যরাতে ঢাকায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে যখন হাজার হাজার বাঙালিকে হত্যা করে ঠিক তখনই বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা বাঙালি জাতিকে দিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের নির্দেশনা। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার পরই পাকিস্তানি বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে। এরপর শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়, প্রকাশ ঘটে স্বতন্ত্র জাতিসত্তার ।
লেখক : গবেষক ও কলামিস্ট
raihan567@yahoo.com