তামিমের অবসর প্রসঙ্গে বিসিবি সভাপতি ‘নিজে থেকে করেছে, এরপর কাঁদছে কেন’

তামিমের অবসর প্রসঙ্গে বিসিবি সভাপতি ‘নিজে থেকে করেছে, এরপর কাঁদছে কেন’

ক্রীড়া প্রতিবেদকঢাকা

তামিম ইকবালের অবসরের পেছনে তাঁর কথার কোনো প্রভাব থাকতে পারে, সেটি বিশ্বাস করেন না বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান। অবসরের ঘোষণা দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তামিম কেন কেঁদেছেন, সেটিও বুঝতে পারছেন না তিনি। তামিমের আচমকা অবসর প্রসঙ্গে আগে থেকে কিছু জানেন না বলেও দাবি করেছেন বিসিবি সভাপতি।

আফগানিস্তান সিরিজ শুরুর আগে সংবাদ সম্মেলনে নিজে শতভাগ ফিট নন বলে জানান তামিম। প্রথম ওয়ানডেটা খেলেই তাঁর ফিটনেস কোন পর্যায়ে আছে, সেটি বোঝার চেষ্টা করবেন বলে জানান বাংলাদেশ অধিনায়ক। তবে তামিমের এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া সংবাদমাধ্যমে জানান বিসিবি সভাপতি।আজ দুপুরে তামিম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকেই বিদায় বলে দেন। তাঁর অমন মন্তব্যের কোনো প্রভাব থাকতে পারে কি না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রথম আলোকে নাজমুল হাসান আজ বলেন, ‘বিন্দুমাত্রও না। ওয়ান পারসেন্টও না। যদিও আমি “না” বলছি না, কারণ জানি না।’

আরও পড়ুন
বিসিবির শেষ চেষ্টাও ঠেকাতে পারেনি তামিমের অবসর
সংবাদ সম্মেলনে অশ্রুসজল তামিম ইকবাল

তবে খেলার জন্য কেউ ফিট কি না, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আগেই জানাতে হবে—এমনও জানিয়েছেন নাজমুল। তাঁর কথা, ‘তবে আবার বলছি, যতবার এমন পরিস্থিতি আসবে, যেকোনো খেলোয়াড়, যদি সে মনে করে খেলার দিন সে সিদ্ধান্ত নেবে খেলবে কি খেলবে না—এগুলো চলবে না। হয় আপনি ফিট, অথবা নন। ফিট থাকলে দলে থাকবেন, না হলে না। এটাই সবার কাছে বার্তা। আমার মনে হয় না পৃথিবীর কোনো দেশে এর ব্যত্যয় ঘটে। এটা আমি করবই।’

আরও পড়ুন
‘এমন কান্নাভেজা বিদায় কেন হবে তামিমের, তাকে আমরা ফুল দিয়ে বিদায় জানাব’
চোখের জলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন তামিম ইকবাল
তবে তাঁর এমন মনোভাব কারও অবসরের কারণ হতে পারে বলেও মনে করেন না নাজমুল, ‘একজন–দুজন নিয়ে কথা না। এটার কারণে কেউ অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিতে পারে বা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটই ছেড়ে দিতে পারে, এটা আমার বিশ্বাস হয় না।’

অবসরের ঘোষণা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তামিম
অবসরের ঘোষণা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তামিমশামসুল হক
তামিম সংবাদ সম্মেলন ডাকার পর থেকেই নাজমুল এর বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। তবে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। আজ সংবাদ সম্মেলন দেখার পর তাঁর প্রতিক্রিয়া কী, এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে নাজমুল বলেন, ‘আমি কিছুই বুঝতে পারছি না, কান্নারই–বা কী হলো। তাকে তো কেউ বসতে বলে নাই। (এমন) করতেও বলে নাই। নিজে থেকে করেছে, এরপর কাঁদছে কেন?’

তামিমের এমন সিদ্ধান্ত আচমকা আসেনি বলেও মনে করেন তিনি, ‘এগুলো পরিকল্পিত। এখন গায়েব হয়ে গেছে কেন? এত দিন না হয় ভেবেছে আমরা আটকাতে চেষ্টা করব, যাতে না করে। এখন করেই ফেলছে। এখন বন্ধ করে রাখছে কেন? আর কী বলব বলেন? খুবই দুঃখজনক।’

আরও পড়ুন
চাপের মুখে তামিমের অবসর?

অন্তত আগামী বিশ্বকাপ পর্যন্ত তামিমই বাংলাদেশের অধিনায়ক হিসেবে বোর্ডের পরিকল্পনায় ছিলেন বলেও জানিয়েছেন নাজমুল। তামিমও সেটি জানতেন বলে দাবি তাঁর, ‘সময়ই তো নাই আমার। আর হঠাৎ করে অধিনায়কত্ব বদলানো সহজ না। কিন্তু আগে বলে না কেন? কাউকে তো জোর করে খেলানো যাবে না। আমাকে বলল সে বিশ্বকাপ খেলবে, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিও খেলবে। এখন হঠাৎ করে, তা–ও আবার সিরিজের মাঝখানে! বলতে পারত দুইটা ম্যাচ খেলবে না, পুরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে না।’

পুরো ঘটনা নাজমুলকে অবাক করছে, ‘আমাদের সাথে বসতে পারত, কথা বলতে পারত। কেউ কিছু জানে না, মানে অদ্ভুত কাহিনি। খুবই আশ্চর্য লাগছে। এগুলা করে লাভ কী? দলের জন্যও তো খারাপ এটা। সব বাদ দেন। সিরিজ চলছে, এর মাঝে খারাপ না এটা? এখন নিশ্চয়ই (সবার) মাথায় চলছে কী হয়েছে না হয়েছে—এটা বের করা। আর একটা হচ্ছে—কে হচ্ছে অধিনায়ক। এসব আমরা তো চাই না।’

এর আগে মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকুর রহিমের বিভিন্ন সংস্করণ থেকে অবসরের পর তামিমের এমন সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতের জন্য ভালো উদাহরণ তৈরি করছে না বলেও মনে করেন নাজমুল।

খেলাধূলা