খেলাপি ঋণ কম দেখাতে পুনঃতফসিলের নীতি উদার করে চলছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এখন চাইলে নিজেরাই যেকোনো ঋণ পুনঃতফসিল করতে পারছে। নীতি ছাড়ের এ সুযোগে ব্যাংকগুলোও ঋণ পুনঃতফসিলের রেকর্ড গড়েছে। শুধু ২০২২ সালেই ব্যাংকগুলোর পুনঃতফসিলকৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৩ হাজার ৭২০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত বছর শেষে দেশের ব্যাংক খাতের পুনঃতফসিলকৃত ঋণের স্থিতি ছিল ২ লাখ ১২ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা, যা ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত মোট ঋণের ১৪ দশমিক ৪০ শতাংশ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩১ দশমিক ৭ শতাংশ ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়েছে শিল্প খাতের। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০ দশমিক ৫ শতাংশ ঋণ পুনঃতফসিল হয়েছে বস্ত্র ও তৈরি পোশাক খাতের। পুনঃতফসিল করা ঋণের ৭১ শতাংশই করেছে দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলো। গ্রাহককে খেলাপি হওয়া থেকে বাঁচাতে ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, পুনঃতফসিল করা ঋণের ১৯ শতাংশ আবারো খেলাপির খাতায় উঠেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্ট ২০২২’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ব্যাংক খাতের পুনঃতফসিলকৃত ঋণ স্থিতির ৩৬ শতাংশই বাড়ে কভিড-১৯ সৃষ্ট দুর্যোগের পর। ২০১৯ সাল শেষেও ব্যাংকগুলোর পুনঃতফসিলকৃত ঋণের স্থিতি ছিল ১ লাখ ৩৬ হাজার ২৪০ কোটি টাকা। ২০২২ সাল শেষে এ ধরনের ঋণের স্থিতি ২ লাখ ১২ হাজার ৭৮০ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকে। অর্থাৎ ২০২০ সাল-পরবর্তী সময়ে পুনঃতফসিলকৃত ঋণের স্থিতি বাড়ে ৭৬ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা।
আগে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত এককালীন বা ডাউন পেমেন্ট জমা দিতে হতো। কিন্তু খেলাপিদের প্রতি নমনীয় হতে গিয়ে ২০১৯ সালে ডাউন পেমেন্টের হার ২ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। যদিও ব্যাংকের প্রভাবশালী বড় গ্রাহকরা কোনো ডাউন পেমেন্ট না দিয়েও খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গ্রাহকের অনুকূলে ঋণসীমা বাড়িয়ে দিয়েও ব্যাংকগুলো খেলাপি হওয়ার যোগ্য ঋণকে নিয়মিত দেখাচ্ছে। বিস্তারিত