ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে আজ শুক্রবার শুরু হচ্ছে বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। পাঁচ দিনের এ উৎসব শেষ হবে আগামী ২৪ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। সর্বজনীন এ উৎসবকে আনন্দমুখর করে তুলতে দেশজুড়ে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।
গত ১৪ অক্টোবর দেবী দুর্গার আবাহন বা মহালয়ার মধ্য দিয়ে সূচনা হয় দেবীপক্ষের। সাধারণত দেবীপক্ষ শুরুর সাত দিন পর পাঁচ দিনের দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনা ঘটে। হিন্দু পুরাণ মতে, রাজা সুরথ প্রথম দেবী দুর্গার আরাধনা শুরু করেন। তিনি বসন্তে পূজার আয়োজন করায় দেবীর এ পূজাকে বাসন্তী পূজাও বলা হয়। কিন্তু রাবণের হাত থেকে সীতাকে উদ্ধার করতে লঙ্কা যাত্রার আগে শ্রী রামচন্দ্র দেবীর পূজার আয়োজন করেছিলেন শরৎকালের অমাবশ্যা তিথিতে, যা শারদীয় দুর্গোৎসব নামে পরিচিত। দেবীর শরৎকালের পূজাকে এ জন্যই হিন্দুমতে অকালবোধনও বলা হয়।
এ বছরের দুর্গাপূজার নির্ঘণ্ট অনুযায়ী, আজ ষষ্ঠী তিথিতে সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটের মধ্যে দেবীর ষষ্ঠাদি কল্পারম্ভ ও ষষ্ঠীবিহিত পূজা শুরু হবে। সায়ংকালে দেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হবে মূল পূজা। সন্ধ্যায় চণ্ডীপাঠের মাধ্যমে এই বোধনের মধ্য দিয়ে দক্ষিণায়নের নিদ্রিত দেবী দুর্গার নিদ্রা ভাঙার জন্য বন্দনা পূজা করা হয়। আগামীকাল শনিবার মহাসপ্তমী। এর পর রোববার মহাঅষ্টমী ও কুমারীপূজা। পরদিন মহানবমী শেষে মঙ্গলবার বিজয়া দশমী ও প্রতিমা বিসর্জন।
দুর্গোৎসব উপলক্ষে পৃথক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটিসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারাও।
সনাতন বিশ্বাস ও পঞ্জিকা মতে, দেবী দুর্গা এবার ঘোড়ায় স্বর্গলোক থেকে মর্ত্যলোকে আসবেন। বিদায়ও নেবেন ঘোড়ায়; যার ফল হচ্ছে ফসল ও শস্যহানি। পূজা উদযাপন পরিষদ জানিয়েছে, এ বছর সারাদেশে ৩২ হাজার ৪০৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হবে। গত বছর পূজা হয়েছিল ৩২ হাজার ১৬৮টি মণ্ডপে। ঢাকা মহানগরীতে এবার ২৪৫টি মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন থাকছে, যা গতবার ছিল ২৪২টি।
এদিকে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের প্রতিটি মণ্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, র্যা ব ও বিজিবি সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী থাকবে। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।