নিজস্ব প্রতিবেদক
বিনা ভোটের সরকারকে জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে; তাই জনগণের বুকে গুলি চালিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের শেষরক্ষা হবে না। বরং রাজপথ রক্তাক্ত হলেও দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণ শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করেই ছাড়বে বলে সরকারকে সতর্ক করে দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
তিনি আজ রবিবার সকালে রাজধানীর মিরপুরে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর অয়োজিত নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকট দূরীকরণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং প্রহসনের ডামি নির্বাচন বাতিল করে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর মিরপুরে এক বিক্ষোভ-পরবর্তী সমাবেশে এসব কথা বলেন।
ড. মু. রেজাউল করিম বলেন, অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারকে মাত্র ৪ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছে।
তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছে দেশের ৯৬ ভাগ মানুষ। প্রহসন ও ডাসি নির্বাচনের কোনো কোনো প্রার্থী দাবি করেছেন, তারা ভারতের প্রার্থী। তাই এই সংসদ ও সরকার কোনোভাবেই জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না।
তিনি জুলুম-নির্যাতন বন্ধ ও পুলিশকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, জনগণের ম্যান্ডেটহীন সরকার জনতার ওপর পুলিশ লেলিয়ে চলমান আন্দোলনকে দমন করার ষড়যন্ত্র করছে।
কিন্তু নির্যাতন করে; গুলি চালিয়ে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না, বরং জনতার রুদ্ররোষে অবৈধ ও মাফিয়া সরকারকে ক্ষমতা থেকে লজ্জাজনকভাবে বিদায় নিতে হবে। তিনি স্বৈরাচার পতনের আগামী দিনের রাজপথের আন্দোলনকে আরো জোরদার করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, সরকার দেশ পরিচালনায় সার্বিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। সরকারি দলের লুটপাট ও অব্যবস্থাপনার কারণে দেশের বাজারমূল্য পরিস্থিতি সব শ্রেণির মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে।
রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকট এখন তীব্র আকার ধারণ করেছে। সরকার নিজেদের উপর্যুপরি ব্যর্থতা ঢাকার জন্যই আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম ও মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান এবং ঢাকা মহানগর উত্তর আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে কারাগারে অন্তরীণ করে রেখেছে। কিন্তু এসব করে আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের শেষরক্ষা হবে না; বরং ইতিহাসের নির্মম পরিণতিতে শেখ হাসিনাকে অবশ্যই ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হবে। তিনি সরকারকে জুলুম-নির্যাতনের পথ পরিহার করে আমিরে জামায়াতসহ সব বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীকে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানান। অন্যথায় সরকারকে গণরোষের মুখোমুখি হতে হবে।
বিক্ষোভ মিছিলটি মিরপুর-১ গোল চত্বর থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে টেকনিক্যাল মোড়ে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য জিয়াউল হাসান, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ ও জামাল উদ্দীন, ঢাকা মহানগর উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য মু. আতাউর রহমান সরকার, ছাত্রনেতা সালাহউদ্দীন, আসাদুজ্জামান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে পুলিশ অতর্কিতভাবে জনতার ওপর হামলা চালিয়ে পথচারীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে।