আর কত কান্না করলে গুম খুনের বিচার পাওয়া যাবে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর ক্ষোভ

আর কত কান্না করলে গুম খুনের বিচার পাওয়া যাবে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর ক্ষোভ

অনলাইন ডেস্ক

 

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুম ও খুনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘ন্যাশনাল কনসালটেশন মিটিং অন রিহ্যাবিলিটেশন, জাস্টিস অ্যান্ড কম্পেনেসেশন ফর দ্য সার্ভাইভার্স অব টর্চার’ শীর্ষক এক পরামর্শ সভায় এমন ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। মায়ের ডাক ফাউন্ডেশন, মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্র ও ছওয়াব এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা বলেন, আর কত কান্না করলে, আর কত দিন স্বজনের ছবি বুকে নিয়ে ঘুরলে গুম-খুনের বিচার পাওয়া যাবে। এ সময় ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের আয়নাঘর পরিদর্শনের সুযোগ না দেওয়ারও সমালোচনা করা হয়।

ছওয়াবের সিইও ও চেয়ারম্যান এস এম রাশেদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহাদি আমিন, এবি পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, মায়ের ডাকের সাধারণ সম্পাদক সানজিদা ইসলাম তুলি, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্রের মহাসচিব মাহবুল হক প্রমুখ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মানবাধিকার সংগঠক রেজাউর রহমান লেলিন।

মাহাদি আমিন বলেন, গুম পরিবার ও গত ২০ বছর যারা রাষ্ট্রীয় নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, বিএনপি তাদের পাশে দাঁড়াবে। বিগত দিনে যেভাবে আপনাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত ছিল, আমরা সেভাবে হয়তো দাঁড়াতে পারিনি। কিন্তু ভবিষ্যতে বিএনপি ক্ষমতায় এলে, আমরা রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক হেফাজতের নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিবর্গের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করব এবং এ ঘটনাগুলোর বিচার করব।

আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, সাবেক সিইসি নুরুল হুদার জন্য যারা মায়াকান্না করছেন, যদিও বিষয়টি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিন দিন ধরে আমরা মিডিয়ায় এর জন্য সুশীল কথা শুনছি, গুম হওয়া পরিবারগুলোর জন্য কোনোদিন সুশীলদের মুখ থেকে সহানুভূতির শব্দ শুনলাম না। এই পরিবারগুলোর জন্য কী গণমাধ্যমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলোচনা হয়েছে? এই হচ্ছে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য। সময় বদলায়, কিন্তু তার বয়ান বদলায় না।

আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, ফ্যাসিবাদ হাসিনার আমলে ১০ হাজারের অধিক মানুষ গুম-খুনের শিকার হয়েছে। এখনো তাদের সন্তানরা ট্রমার মধ্যে রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, যাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি, তাদের ভুলে গেলে চলবে না।

সানজিদা ইসলাম তুলি বলেন, গত ১২ বছর আমাদের পাশে যারা ছিল, তাদের প্রত্যেকেই কাউকে না কাউকে হারিয়েছে। তার পরও শত বাধা উপক্ষো করে তারা ফ্যাসিবাদের রক্তচক্ষুর মুখোমুখি হয়ে রাজপথে দাঁড়িয়েছিল। ৫ আগস্টের পর যখন আমাদের কোনো স্বজনরা ফিরে আসেনি, তখন আমরা বেশি হতাশাগ্রস্ত হয়েছি। ফ্যাসিবাদের পতন হলেও এখনো ঘাপটি মেরে তাদের দোসররা বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে আছে। তাদের এখনো আমরা বিচারের মুখোমুখি করতে পারিনি। তাদের আইনের আওতায় না আনা পার্যন্ত আমাদের বিশ্রাম নেই।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ