লালদিয়া টার্মিনালে ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালসের বিনিয়োগে নতুন যুগের সূচনা

লালদিয়া টার্মিনালে ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালসের বিনিয়োগে নতুন যুগের সূচনা

অর্থ বাণিজ্য ডেস্ক

বাংলাদেশের বাণিজ্য এবং বৈদেশিক বিনিয়োগ খাতে একটি নতুন যুগের সূচনা হতে চলেছে। ১৭ নভেম্বর, সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালসের লালদিয়া টার্মিনালে বিনিয়োগের কথা উল্লেখ করে বলেন, এটি দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং নতুন সূচনা। তিনি বলেন, এই বিনিয়োগ ডেনমার্ক এবং ইউরোপ থেকে বৃহত্তর ও বহুমুখী বিনিয়োগের দ্বার উন্মোচন করবে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মায়ের্স্ক গ্রুপের চেয়ারম্যান রবার্ট মায়ের্স্ক উগলা এবং ডেনমার্কের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক স্টেট সেক্রেটারি লিনা গান্দলোসে হ্যানসেন। উগলা, যিনি ডেনমার্কের বড় শিপিং কোম্পানি মায়ের্স্ক গ্রুপের মালিক, লালদিয়া টার্মিনালে বিনিয়োগের বিষয়ে বলেন, এটি বাংলাদেশে কোনো ইউরোপীয় কোম্পানির সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ হতে যাচ্ছে। তিনি আরও জানান, ২০৩০ সালে টার্মিনালটি চালু হলে চট্টগ্রাম বন্দরে বড় জাহাজের আগমন সম্ভব হবে এবং এটি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের গতি আনবে।

উগলা আরও বলেন, লালদিয়া টার্মিনাল হবে একটি টেকসই বন্দর, যা শুধু আঞ্চলিক বাণিজ্যই নয়, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এটি আরও বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে এবং ডেনিশ বিনিয়োগের মাধ্যমে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করবে।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস ডেনমার্কের এই বিনিয়োগ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “এটি আমাদের জন্য একটি মাইলফলক।” তিনি এপিএম টার্মিনালসকে লালদিয়া টার্মিনালের নির্মাণ দ্রুত সম্পন্ন করার আহ্বান জানান এবং জোর দিয়ে বলেন, “বাংলাদেশকে লাখ লাখ উৎপাদনশীল কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে এবং অবকাঠামো উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, লালদিয়া টার্মিনাল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করবে এবং এটি ভবিষ্যতের বাণিজ্য ও অর্থনীতির সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে। চট্টগ্রাম উপকূলরেখার বন্দরগুলিকে বিশ্বমানের সুবিধায় রূপান্তর করা দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বৈঠক শেষে, মায়ের্স্ক গ্রুপের চেয়ারম্যান রবার্ট মায়ের্স্ক উগলা বলেন, “আমরা অধ্যাপক ইউনূসের কাজ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছি এবং এই বিনিয়োগ স্থানীয় সম্প্রদায় এবং নারীদের সহায়তার উদ্যোগেও গুরুত্ব দেবে।”

ডেনমার্কের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক স্টেট সেক্রেটারি লিনা গান্দলোসে হ্যানসেন, বাংলাদেশের নতুন শ্রম আইন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অভিনন্দন জানান এবং বলেন, “এটি আরও বেশি ইউরোপীয় কোম্পানিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে উৎসাহিত করবে।”

এ বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিডা নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং বাংলাদেশে ডেনিশ রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিক্স মোলারও উপস্থিত ছিলেন।

লুৎফে সিদ্দিকী ডেনিশ বিনিয়োগের প্রশংসা করে বলেন, “এটি আমাদের জন্য একটি মাইলফলক, যা বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে সরকারের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে।”

অর্থ বাণিজ্য