জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্র সংস্কার: তৃতীয় শক্তি হিসেবে নতুন রাজনৈতিক জোট গঠন

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও রাষ্ট্র সংস্কার: তৃতীয় শক্তি হিসেবে নতুন রাজনৈতিক জোট গঠন

রাজনীতি ডেস্ক

রাজনীতিতে বিএনপি ও জামায়াতের বাইরে তৃতীয় শক্তি হিসেবে একটি নতুন রাজনৈতিক জোট গঠন করা হচ্ছে, যার মূল লক্ষ্য জুলাই সনদের বাস্তবায়ন এবং রাষ্ট্রের শাসনতান্ত্রিক সংস্কার নিশ্চিত করা। জোটটির নেতৃত্বে থাকছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), এবং এতে অন্তর্ভুক্ত হবে আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও প্ল্যাটফর্ম। এ জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আগামী ডিসেম্বরে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

নির্বাচনের আগে গঠিত হলেও জোটটি মূলত দীর্ঘমেয়াদে একটি প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করবে এবং জাতীয় নির্বাচনে জোটবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করবে। জোট গঠন প্রক্রিয়ায় ইতিমধ্যেই পাঁচটি দল ও প্ল্যাটফর্ম একতাবদ্ধ হয়েছে। তৃতীয় শক্তির অংশ হিসেবে স্থান পাচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ) এবং গণতন্ত্র মঞ্চের একটি দল। এছাড়াও গণঅধিকার পরিষদসহ আরও কয়েকটি দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এবং রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আরিফুল ইসলাম আদীব জানান, রাষ্ট্র সংস্কার ও জুলাই সনদের বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইতিবাচক দলগুলোর অংশগ্রহণে নতুন রাজনৈতিক বলয় গড়ে তোলার বিষয়ে আলোচনা চলছে। তিনি বলেন, জোট গঠিত হলে এটি দীর্ঘমেয়াদে দেশের শাসনতান্ত্রিক সংস্কার ও জুলাই সনদের বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে।

আগের বছরের অক্টোবরে জোট গঠনের প্রাথমিক আলোচনা চললেও বিভিন্ন কারণে তা স্থগিত হয়। এরপর আপ বাংলাদেশ, এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন যৌথভাবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য একাধিক কর্মসূচি সম্পন্ন করেছে। চলতি মাসের ৫ তারিখে রাজধানীর পল্টনে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরি সভায় গণঅধিকার পরিষদ, এনসিপি, গণসংহতি আন্দোলন, নাগরিক ঐক্য, এবি পার্টি এবং গণতন্ত্র মঞ্চের ছয়টি দল অংশগ্রহণ করে। সভায় শুধু আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নয়, জুলাই সনদের বাস্তবায়নকেও প্রধান লক্ষ্য হিসেবে আলোচনার মাধ্যমে চিহ্নিত করা হয়।

ফেনীতে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু সম্প্রতি জানিয়েছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নতুন জোট গঠন করা হবে। জোটে অংশগ্রহণ করবে সেই দলগুলো যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছে। জোট গঠনের ক্ষেত্রে দলের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব থাকলেও শেষ মুহূর্তে আরও কিছু দলের আগ্রহ প্রকাশের কারণে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা কিছুটা সময়সাপেক্ষ হতে পারে।

জোটের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে দীর্ঘমেয়াদী ও সুদূরপ্রসারী হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া জোটটি আসন্ন নির্বাচনে একতাবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করবে এবং প্রয়োজনীয় সমন্বয় রেখে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সক্রিয় ভূমিকা রাখবে। এর মাধ্যমে তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি দেশের রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে একটি স্থায়ী প্রভাব তৈরি করতে প্রস্তুত হচ্ছে।

রাজনীতি শীর্ষ সংবাদ