দেশে ২৪ ঘন্টায় করোনায় মৃত্যু ৩৭ জন, সুস্থ ২,৯৪৯

দেশে গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩৭ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। আর সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৯৪৯ জন।
গতকালের চেয়ে আজ ৫ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৩২ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৭ হাজার ৮৯ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ। গতকালও মৃত্যুর একই হার ছিল।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৯৪৯ জন। গতকালের চেয়ে আজ ৪৪৪ জন কম সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ৩ হাজার ৩৯৩ জন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৪ লাখ ২৩ হাজার ৮৪৫ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৬ দশমিক ০৯ শতাংশ। গতকাল সুস্থতার হার ছিল ৮৫ দশমিক ৮০ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ২৯ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১৬ হাজার ৮২৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৭৯৯ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকাল ১২ হাজার ৭৪৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৩৫৫ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১০ দশমিক ৬৯ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১০ দশমিক ৬৩ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ০৬ শতাংশ বেশি।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ২৯ লাখ ৮৬ হাজার ৪৫৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪ লাখ ৯২ হাজার ৩৩২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার ২৩ লাখ ৮৬ হাজার ৭৫৩টি হয়েছে সরকারি এবং ৫ লাখ ৯৯ হাজার ৭০৫টি হয়েছে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৬ দশমিক ৫২ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৭ হাজার ২৪২ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১২ হাজার ৮০২ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৪ হাজার ৪৪০টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের সরকারি ৭৭ ও বেসরকারি ৬৩টিসহ ১৪০টি পরীক্ষাগারে (এন্টিজেন টেস্টসহ) নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৬ হাজার ৮২৮ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১২ হাজার ৭৪৮ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৪ হাজার ৮০টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৮৯০ দশমিক ৮৬ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ২৪৮৮ দশমিক ৭২ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৪১ দশমিক ৬২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ৩৭ জনের মধ্যে পুরুষ ২৭ জন, আর নারী ১০ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ৪১৩ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৬৭৬ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ৩৭ জনই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৪১ থেকে ৫০ বছরের বছরের ২ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৮ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ২৭ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৩ জন; যা দশমিক ৪৭ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৫৫ জন; যা দশমিক ৭৮ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৫৭ জন; যা ২ দশমিক ২১ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৬০ জন; যা ৫ দশমিক ০৮ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৮৩৯ জন; যা ১১ দশমিক ৮৪ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৮২১ জন; যা ২৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৩ হাজার ৮২৪ জন; যা ৫৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ২৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭ জন, খুলনায় বিভাগে ৩ জন এবং রাজশাহী ও সিলেট বিভাগে বিভাগে ১ জন করে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৩ হাজার ৮৬৩ জন; যা ৫৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ৩১৫ জন; যা ১৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৪১৯ জন; যা ৫ দশমিক ৯১ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৫১১ জন; যা ৭ দশমিক ২১ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২৩১ জন; যা ৩ দশমিক ২৬ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৭৯ জন; যা ৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ৩১৮ জন; যা ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৫৩ জন; যা ২ দশমিক ১৬ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ২৬০টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৬ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ২৫৪টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ২৮৮টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২৩৭ জন ও শয্যা খালি আছে ৫১টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬৮৭টি, ভর্তিকৃত রোগী ২৯৪ জন ও শয্যা খালি আছে ৩৯৩টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৪৫টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ২৪ জন ও শয্যা খালি আছে ২১টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ৫৬৫টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৬০৪ জন ও শয্যা খালি আছে ৫ হাজার ৯৬১টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২৩৭টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৭৩ জন ও শয্যা খালি আছে ১৬৪টি। সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১০ হাজার ৫১২টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৯০৪ জন এবং শয্যা খালি আছে ৭ হাজার ৬০৮টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৭০টি, রোগী ভর্তি আছে ৩৩৪ জন এবং খালি আছে ২৩৬টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ১৯২টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৬৬৭টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৬১৩টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ২ হাজার ৯৪৯ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ২ হাজার ১৬৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৯৫ জন, রংপুর বিভাগে ৬০ জন, খুলনা বিভাগে ৯৪ জন, বরিশাল বিভাগে ৩১ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫১ জন, সিলেট বিভাগে ৩২ জন এবং ময়মনসিংহে ২২ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৭১২ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ২৫ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৯২ হাজার ৮০১ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫ লাখ ৫২ হাজার ৫২১ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪০ হাজার ২৮০ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১৬০ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৩১৬ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৯৩ হাজার ৯৯৭ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৮১ হাজার ৫২০ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ৪৭৭ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৬ হাজার ১৫ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১৩ লাখ ৪০ হাজার ৬৬৫ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৩ হাজার ২১৮টি, ৩৩৩ এই হটলাইন নম্বরে ৪ হাজার ৪০৪টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ১৮৭টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৮০৯টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ৩১ লাখ ৫৯ হাজার ১৯৩টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ৩ হাজার ৪৫৪ জন, এবং এ পর্যন্ত ৬ লাখ ১৯ হাজার ৫৯৫ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ১৩ লাখ ৬১ হাজার ৪৩৭ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৭২ হাজার ৮৫৮ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭ কোটি ৪ লাখ ৬১ হাজার ৯২৬ জন এবং ১৫ লাখ ৯৯ হাজার ৭০৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ