আতাউর রহমান |
করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে টানা ১০ দিন ধরে চলা কঠোর লকডাউনের প্রতিদিনই রাজধানীর সড়কে গাড়ি ও লোকজনের চলাচল বেড়ে চলছে। লকডাউনে বাইরে বের হওয়ার ক্ষেত্রে ‘অতি জরুরি কাজের’ অজুহাত দিচ্ছেন বেশিরভাগ মানুষ।
শনিবার সরকারি ছুটির মধ্যেও রাজধানীর সড়কগুলোতে ব্যক্তিগত গাড়ির সারি দেখা গেছে। রিকশার সঙ্গে বেড়েছে সাধারণ মানুষের চলাচলও।
বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে রাস্তায় রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও। পুলিশ-র্যাবের পাশাপাশি সেনাবাহনী ও বিজিবিও দায়িত্ব পালন করছে। বাইরে বের হওয়ার কারণ যাচাইয়ের পাশাপাশি করোনাভাইরাস সস্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করছেন তারা।
ঢাকার মূল সড়কগুলোতে রাখঢাক থাকলেও শনিবার বিভিন্ন এলাকার পাড়ামহল্লার অলিগলি ঘুরে লকডাউনের কোনো কার্যক্রম সে-অর্থে চোখে পড়েনি। এলাকাগুলোতে চায়ের দোকান থেকে শুরু করে প্রায় সব দোকানপাট খোলা দেখা গেছে। চলাচলরত মানুষদের বেশিরভাগের মুখে মাস্কও দেখা যায়নি। কারো কারো থুঁতনিতে দেখা গেছে মাস্ক।
শনিবার রাজধানীর ওয়ারী, যাত্রাবাড়ী, ধলপুর, সায়েদাবাদ, নবাবপুর, বাংলাবাজার, চকবাজার, গুলিস্তান, চাঁনখারপুল এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে এসব দৃশ্য।
চকবাজার ও নবাবপুরে মার্কেটগুলো ‘বন্ধ’ থাকলেও কলাপসিবল গেটের ফাঁক দিয়ে বেচা-বিক্রি চলতে দেখা গেছে। কেনা-বেচার জেরে মার্কেটগুলোর সামনে লোকজনের ভিড়ও লেগে থাকছে। অনেক দোকানের সামনে টাঙানো হয়েছে জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য ফোন নম্বর। ক্রেতারা সেই নম্বরে ফোন দিয়ে কিনছেন মালামাল। তবে এসব মালামালের বেশিরভাগই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নয়।
নবাবপুরের একজন ব্যবসায়ী কলিম উল্লাহ সমকালকে বলেন, ‘মানুষের নানা ইলেকট্রিক পণ্য দরকার হয়। গ্রামে বা ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় লাইট, ফ্যান, ক্যাবলের দোকানগুলোও খোলা। এজন্য অনেক খুচরা দোকানি আমাদের ফোন দেন। সেই চাহিদা অনুযায়ী, মালামাল সরবরাহ করছি আমরা। অনেকে মার্কেটের সামনে এসেও যোগাযোগ করেন।’
এদিকে শনিবার রিকশা, ব্যক্তিগত ও পণ্যবাহী গাড়ির সঙ্গে মোটরসাইকেলের চলাচলও ছিল অনেকটা অবাধে। কোনো কোনোটিতে চালকসহ আরও আরোহী দেখা গেছে। এসব গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রে জরুরি প্রয়োজনীয়তা যাচাইয়ে পুলিশের চেকপোস্টগুলোতে লম্বা লাইনও দেখা গেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ইফতেখাইরুল ইসলাম সমকালকে বলেন, তারা বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে নিরন্তর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। চেকপোস্টের পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালত ও এলাকায় থানা পুলিশের টহল গাড়িও দায়িত্ব পালন করছে। কেউ অযথা বাইরে বের হলে মামলা বা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।