ইউক্রেনে চলছে রুশ সামরিক অভিযান। পশ্চিমা বাধা উপেক্ষা করে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানোতে নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়েছে রাশিয়া। এমন পরিস্থিতিতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১০০ বছরেরও বেশি সময় পর এই প্রথমবারের মতো বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হয়েছে দেশটি।
রোববারের (২৬ জুন) মধ্যে রাশিয়ার ১০০ মিলিয়ন ডলার শোধ করার কথা ছিল। ঋণখেলাপ এড়াতে সংকল্পবদ্ধ ছিল রাশিয়া- এমনটাই জানিয়ে ক্রেমলিন বলছে, ‘এটি রাশিয়ার মর্যাদার ওপর আঘাত।’
রুশ কর্তৃপক্ষ বলছে, রাশিয়ার কাছে অর্থ রয়েছে এবং ঋণ পরিশোধের জন্য দেশটি অর্থ প্রদান করতে ইচ্ছুক। কিন্তু নিষেধাজ্ঞাগুলো আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের অর্থ প্রদান করা অসম্ভব করে তুলেছে। রুশ অর্থমন্ত্রী এন্তোন সিলুয়ানভ এই পরিস্থিতিকে একটি প্রহসন হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
রাশিয়ার বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৪০ বিলিয়ন ডলার। এদিকে রাশিয়া জ্বালানি সরবরাহ করে দৈনিক ১ বিলিয়ন ডলার আয় করছে। এমন পরিস্থিতিতে অর্থমন্ত্রী সিলুয়ানভ জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে আর কোনো বৈদেশিক ঋণ নেবে না রাশিয়া।
শেষবার রাশিয়া বৈদেশিক ঋণখেলাপি হয়েছিল ১৯১৮ সালে। বলশেভিক বিপ্লবের সময় নতুন কমিউনিস্ট নেতা ভ্লাদিমির লেনিন রুশ সাম্রাজ্যের ঋণ পরিশোধ করতে অস্বীকার করেছিলেন।
১৯৯৮ সালেও দেশটি একবার অভ্যন্তরীণ ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলেও সে সময়ও দেশটির বৈদেশিক ঋণখেলাপ হয়নি। ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞায় বৈশ্বিক ব্যাংকিং সিস্টেম সুইফট থেকে ছিটকে পড়ে রাশিয়া। সে সময়েই রাশিয়ার ঋণখেলাপি হওয়া অনিবার্য বলে মনে ধরে নেয়া হচ্ছিল।
ইউক্রেন আক্রমণের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন কর্তৃক প্রথম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর থেকে রাশিয়া ডিফল্টের একটি অনিবার্য পথে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। রাশিয়া প্রতিদিন ১ বিলিয়ন ডলারের জ্বালানি রপ্তানি করছে এবং ভবিষ্যতে তাদের ঋণ নেয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে দেশটির কর্মকর্তারা।