যানবাহনের সংকট আর পথের নানা বাধা পেরিয়ে খুলনার সমাবেশস্থলে জড়ো হয়েছেন বিভাগের বিভিন্ন জেলার বিএনপির নেতা-কর্মীরা। পাশাপাশি নগরের কেডি ঘোষ রোডে খুলনা বিএনপির দলীয় কার্যালয় এলাকা স্লোগান, মিছিল আর গান–বাদ্যের তালে মুখর হয়ে উঠেছে।
সমাবেশের প্রধান অতিথি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাত সাড়ে নয়টার দিকে সমাবেশস্থল পরিদর্শন করেন। এরপরই ডাকবাংলো এলাকার সোনালী ব্যাংক চত্বরে সমাবেশ মঞ্চ নির্মাণের কাজ শুরু হয়।
সমাবেশস্থলে যশোর সদরের ৪ নম্বর নোয়াপাড়া ইউনিয়নের একটি ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সিরাজ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের ইউনিয়ন থেকে কম করে হলেও ৫০০ মানুষ এসেছে। খাওয়াদাওয়ার বিষয় পরে দেখা যাবে। রাতে রাস্তায় থাকব। এখনই লোকজন ভরে গেছে। বাধা না দিলে যশোর থেকেই এক হাজার গাড়ি ভরে মানুষ আসত। বাধা দিয়ে চলমান সংগ্রাম ঠেকানো যাবে না।’
শুক্রবার রাত ১০টার দিকে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে দেখা যায়, কেডি ঘোষ রোডের থানার মোড় থেকে কদমতলা স্টেশন রোড পর্যন্ত রাস্তায় পা ফেলার জায়গা নেই। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা দলটির কর্মীরা নেতাদের নামে, দলের বিভিন্ন ইস্যুতে স্লোগান দিচ্ছেন। হেলাতলা মোড়ের স্বর্ণপট্টির পাশে বড় একটি জায়গাজুড়ে একদল কর্মী গান–বাজনা করছেন। গানের ওই আসর ঘিরেও বড় জটলা দেখা যায়। সমাবেশে আসা নেতা–কর্মীদের বেশিরভাগের কাছেই রাতে ঘুমানো বা বিশ্রামের জন্য পলিথিন বা প্লাস্টিকের বস্তা দেখা গেছে। খুলনা বিপণিবিতানের প্রধান ফটকের সামনে অনেক কর্মী বস্তা বিছিয়ে শুয়ে পড়েছেন।
বেনাপোল থেকে আসা বিএনপির কর্মী ওমর ফারুক বলেন, ‘বাসে এসেছি। ক্ষমতাসীন দলের লোকজন টেনেহিঁচড়ে নাভারণে নামিয়ে দিয়েছে। এরপর আবার ঝিকরগাছায় নামিয়ে দিয়েছে। নানা বাধায় যশোর পর্যন্ত আসার পর ট্রেনে আসতে পেরেছি।’
বস্তা বিছিয়ে বিশ্রাম নেওয়া দলের দুজন মো. আজিজুর রহমান ও আবদুর রহমান বলেন, ‘ঝিকরগাছা থেকে আমরা এসেছি। বাড়ি থেকে বস্তা নিয়ে এসেছি। এখানে ফাঁকা পেয়ে কয়েল জ্বালিয়ে শুয়ে আছি। এখানে তো উৎসবমুখর পরিবেশ। কোনোরকম ভয় লাগছে না।’
নড়াইল সদর উপজেলা বিএনপির নেতা মোজাহিদুর রহমান জানান, তাঁরা ট্রলারে করে সমাবেশে এসেছেন।সমাবেশস্থলে স্লোগান দিচ্ছিলেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও যুবদলের সদস্যসচিব গোলাম কিবরিয়া। তাঁরা প্রথম আলোকে জানান, তাঁরা একসঙ্গে ১০০ জন ট্রেনে এসেছেন। তাঁদের উপজেলা থেকে রাতের বিভিন্ন ট্রেনে আরও ৪০০ লোক আসবেন। পথে তাঁরা দুই জায়গায় ঝামেলায় পড়েছেন।
খুলনা নগর বিএনপির সদস্য এহতেশামুল হক বলেন, হাজার হাজার মানুষ খুলনায় চলে এসেছেন। তাঁরা সমাবেশস্থল ও দলীয় কার্যালয় এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন। সব বাধা মোকাবিলা করেও খুলনার সমাবেশে লাখ লাখ লোকের সমাগম হবে।
এর আগে শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে খুলনায় দুই দিনের পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়।