৭২ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক ও সিগনেচার ব্যাংকের মতো যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দুটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নড়েচড়ে বসেছে সরকার। ব্যাংক খাত রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ নতুন তহবিল গঠনে জোর দিচ্ছে।
ব্যাংক টার্ম ফান্ডিং প্রোগ্রাম (বিটিএফপি) নামে নতুন এই তহবিলের পরিকল্পনা এরই মধ্যে প্রকাশ করেছে ফেডারেল রিজার্ভ। এর আওতায় ব্যাংক, সঞ্চয়ী সংস্থা, ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানসহ যোগ্য আমানত সংগ্রাহক প্রতিষ্ঠানগুলোকে একবছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে ঋণ দেওয়া হবে।
আজকের পত্রিকা অনলাইনের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
ফেডারেল রিজার্ভের নতুন এই তহবিলে প্রধান প্রধান যেসব বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, তা হলো-
আর্থিক চাপমুক্তি
৪০ বছরে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় গত বছর ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক সুদের হার ৪ দশমিক ৫০ থেকে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছিল, যা আগে ছিল প্রায় শূন্য শতাংশ।
এর ফলে ব্যাংকগুলোর কাছে থাকা পুরোনো মূল্যবান বন্ডগুলোর দাম পড়ে যায়। তহবিল যোগাতে ব্যর্থ হয়ে সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের বন্ধ হওয়ার পেছনে অন্যতম বড় কারণও এটি। অন্য ব্যাংকগুলো একই পথ ধরতে পারে বলে উদ্বেগে রয়েছেন কর্মকর্তারা।
বিটিএফপির আওতায় এই উদ্বেগের বড় প্রশমন ঘটবে। এই তহবিলের সুদের হার হবে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ।
ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক এক বিবৃতিতে বলেছে, বিটিএফপির আওতায় উচ্চ মানের শেয়ারগুলোর বিপরীতে দ্রুত তারল্য বা ঋণসুবিধা পাওয়া যাবে। যাতে আর্থিক সংকটের সময় কোনো প্রতিষ্ঠানকে শেয়ার বিক্রি করতে না হয়।
এক বছরের জন্য ঋণ
নতুন সুবিধার আওতায় এক বছর পর্যন্ত মেয়াদী ঋণ পাওয়া যাবে। ঋণগ্রহীতারা জরিমানা ছাড়াই আগাম ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন। ২০২৪ সালের ১১ মার্চ পর্যন্ত এই ঋণ নেওয়া যাবে।
ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক স্বীকৃত যে কোনো আমানত সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান (ব্যাংক, সঞ্চয়ী সংস্থা বা ক্রেডিট ইউনিয়ন) অথবা বিদেশি ব্যাংকের শাখা বা সংস্থা প্রাথমিকভাবে ঋণ পাওয়ার যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে।
ট্রেজারি ব্যাকস্টপ
ট্রেজারি অধিদপ্তরের এক্সচেঞ্জ স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড থেকে বিটিএফপি নামে এই তহবিল যোগানো হবে। এর মাধ্যমে ফেডারেল রিজার্ভের অধীনে থাকা ১২টি ব্যাংকের মাধ্যমে আড়াই হাজার কোটি ডলারের ঋণ বিতরণ করবে।
অর্থনীতিবিদেরা মনে করছেন, বিটিএফপি নামের নতুন এই প্রোগ্রামটি তারল্য সমস্যাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যাংকগুলোকে সুরক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি সুদের হারের ঝুঁকি থেকেও বাঁচাবে। যা ঝুঁকিতে থাকা ব্যাংকগুলোর সংকট কাটিয়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।