সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ভেঙে গেল পরীমনি ও শরিফুল রাজের সংসার। চলতি মাসের গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাজকে ডিভোর্স দিয়েছেন পরী। দুই বছর পূর্ণ হওয়ার ২৯ দিন আগেই বিচ্ছেদের পথে হাঁটলেন এই তারকা দম্পতি। বিচ্ছেদের কাগজে পরীমনি উল্লেখ করেছেন, স্বামীর সঙ্গে বনিবনা ও খোঁজ-খবর না নেওয়া, মনের অমিল ও মানুষিক অশান্তির কারণ।
পরীমনির আইনজীবী মো. শাহীনুজ্জামান জানান, মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ি কাজী অফিসে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিবাহ হয়। আর যদি কেউ বিচ্ছেদ চায়, তাহলে তাকে একই নিয়মে কাজীর মাধ্যমে বিচ্ছেদের প্রক্রিয়ার জন্য আবেদন করতে হয়। আর এই নোটিশের প্রক্রিয়া মেনেই তিন মাস পর তালাক কার্যকর হয়। চিত্রনায়িকা পরীমনি তার সাংসারিক জীবনে অতিষ্ঠ হয়েই সিদ্ধান্তটা নিয়েছেন। কাজীর মাধ্যমে সে ডিভোর্স লেটারটা পাঠিয়েছে।
তিনি আরও জানান, তাদের কাবিননামায় দেনমোহর ছিল ১০১ টাকা। যেটা উসুল দেখানো হয়েছে। এই বিচ্ছেদ লেটার পাঠানোর মাধ্যমে তাদের আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে তারা যদি ৩ মাসের মধ্যে স্থানীয় কাউন্সিলর বা সিটি করপোরেশনে গিয়ে নিজেদের মধ্যে আপস করে সংসার করতে চায়; তাহলে ডিভোর্স কার্যকর হবে না।
এদিকে, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৪টার দিকে রাজের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনেন পরী। এক ফেসবুকবার্তায় এই চিত্রনায়িকা লিখেছেন, ‘ধরেন এই কাজটা আমি যদি করতাম। একজনকে ভাই পরিচয় দিয়ে তার বাসায় যাবতীয় জিনিসপত্র নিয়ে গিয়ে তার সঙ্গে মাসের পর মাস পার করে দিতাম- কি বলতেন আমাকে তখন? আজ আমাকে রাজ এবং তার পাতানো বোন মিলে গায়ে হাত তুলেছে। তার জবাব মিডিয়া দিতে পারবেন তো?
তিনি আরও লিখেছেন, ‘রাজ কার সঙ্গে থাকে? সুগার মমি নাকি কোনো অনৈতিক ব্যবসায়িক চক্র? কি চলে মহানগর প্রোজেক্টে তাদের ওই বাসা নামক অপকর্মের আস্তানায়? প্রশাসন, মিডিয়া যারা আছেন বের করেন এবার! অনেক কথা বলার বাকি! এত চুপ থাকা যায় না।’
তবে এমন পোস্ট দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই সেটি মুছে ফেলেন পরী। এ বিষয়ে জানতে পরীমনির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। বন্ধ আছে রাজের ফোনও।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে গুণী নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘গুণিন’ সিনেমার সেটে রাজের সঙ্গে পরিচয় হয় পরীর। সেই বছর ১৭ অক্টোবর গোপনে বিয়ে করেন তারা। যদিও তাদের বিয়ের সংবাদটি প্রকাশ্যে আসে পরের বছর ১০ জানুয়ারিতে।
শরিফুল রাজের প্রকাশিত একটি ছবিতে দেখা যায়, হাসপাতালের বাইরে হুইলচেয়ারে বসে আছেন পরীমনি, হাতে একটি ফুল। পেছনে দাঁড়িয়ে রাজ। এরপরই জানা যায়, মা হচ্ছেন পরী। আর তখনই বেরিয়ে আসে তাদের গোপন বিয়ের সংবাদটি।
অবশেষে ২০২২ সালের ২১ জানুয়ারি হলুদ অনুষ্ঠানের পর ২২ জানুয়ারি রাতে জমকালো আয়োজনে শরিফুল রাজ-পরীমনির বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। আর ২০২২ সালের ১০ আগস্ট এই দম্পতির ঘর আলো করে আসে পুত্রসন্তান শাহীম মুহাম্মদ রাজ্য।