নিজস্ব প্রতিবেদক
জিম্মি করে টাকা আদায়ের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) মিরপুর মডেল থানার সেকশন-২ থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারদের মধ্যে ৩ জন নারী ও ১ জন পুরুষ রয়েছেন। প্রেমের ফাঁদে ফেলে ঘরে ডেকে জিম্মি করে টাকা আদায় করতের তারা।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, খাদিজা (২৭), মো. হাদিউল ইসলাম বাবু (৩৪), মুনমুন (৩০), ওয়াসফিয়া খানম (২৬)। এই চক্রে বাবু, মুনমুন এবং ওয়াসফিয়া তাদের ইংরেজি নামের আদ্যক্ষর দিয়ে বিএমডব্লিউ রাখেন। তারা বিএমডব্লিউ গ্রুপ নামে পরিচিত।
বুধবার (১১ অক্টোবর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মিরপুর মডেল থানান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন।
ওসি জানান, গ্রেপ্তাররা বিভিন্ন পেশায় জড়িত। বাবু ব্যবসায়ী, খাদিজা ও মুনমুন গৃহিণী এবং ওয়াসফিয়া একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ-এর শিক্ষার্থী। ওয়াসফিয়া এই চক্রের মাস্টারমাইন্ড। তিনিই মূলত পরিকল্পনা সাজান। এই চক্র প্রথমেই একজনকে টার্গেট করে। যাকে টার্গেট করা হয় তার সঙ্গে অনলাইনে অথবা অফলাইনে বন্ধুত্ব করা হয়। অফলাইনে তাদের যেকোন একজন মেয়ে আর্থিক সহযোগিতার নামে পরিচিত হন। যেহেতু বিকাশের মাধ্যমে সহযোগিতা করে, তাই মোবাইল নাম্বার সাথে সাথেই সংগ্রহ করা যায়। এরপর সেই নম্বরে নিয়মিত যোগাযোগ করে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে। এক পর্যায়ে সেই টার্গেটকে বাসায় ডেকে আনা হয়। বাসায় আসলেই চক্রের বাকি সদস্যরা মারধর করে টাকা ও মোবাইল নিয়ে ফেলেন। এসময় মেয়ে সদস্যরা ওই ছেলের সাথে আপত্তিকর ছবি তুলে। তারপর সে ছবি স্ত্রী কিংবা পরিবারের কাছে পাঠিয়ে বড় অংকের টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর হুমকি দেন। উপায়ন্তর না দেখে এবং সামাজিক মর্যাদাহানির ভয়ে ভুক্তভোগীরা টাকা দিয়ে দেয়।
ওসি মহসিন জানান, এই একই কায়দায় দেড় মাস আগে এক এনজিও কর্মকর্তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়েন এই চক্রের সদস্য খাদিজা। বাবা অসুস্থ বলে তিনি ওই ব্যক্তির কাছ থেকে প্রথমে ২০০ টাকা নেন। এই টাকা নেওয়ার মাধ্যমেই পরিচিত হন। এরপর বিভিন্ন সময় ফোন দিয়ে সম্পর্ক গভীর করেন। এক পর্যায়ে গতকাল মঙ্গলবার তাকে বাসায় ডাকেন খাদিজা। বাসায় আগে থেকেই ছিলেন বাবু, মুনমুন, ওয়াসফিয়া। তিনি বাসায় ঢোকার সাথে সাথেই তাকে বেঁধে মারধর করে মোবাইল ও নগদ ৫ হাজার টাকা নিয়ে নেন। এরপর তার স্ত্রীকে ফোন করে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। শেষে ১০ হাজার ২০০ টাকায় রফা করেন। টাকা নিয়ে রাতে তাকে ছেড়ে দিতে আসলে তিনি চিৎকার শুরু করেন। এসময় আশেপাশের লোক এসে তাদের আটক করেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে নেওয়া টাকা ও মোবাইল উদ্ধার করা হয়।