বিশ্বের সবচেয়ে বড় ওয়েব সামিটের পর্দা নামছে আজ (শুক্রবার)। তথ্যপ্রযুক্তিতে উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তিখাতে উদ্ভাবনী শক্তির অভিজ্ঞতা নিতেও বিশ্বের ১৬০টির বেশি দেশ তাদের ছোট বড় স্টার্টআপ নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। তবে ডিজিটাল বাংলাদেশের কোন স্টল বা প্রতিনিধির উপস্থিতি ছিল না এখানে। তবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে কয়েকজন বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সার তাদের নতুন স্টার্টআপ পরিকল্পনা নিয়ে ওয়েব সামিটে অংশগ্রহণ করেছেন।
সেখানে অংশ নেওয়া বাংলাদেশের সুলেমান আহমেদ আক্ষেপের সূরে বললেন, প্রযুক্তি খাতের শীর্ষ দেশগুলোসহ ১৬০টিরও বেশি দেশের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেছেন। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার ভারত ও পাকিস্তানের নিজস্ব প্যাভিলিয়ন এবং প্রতিনিধি ছিল। অথচ ডিজিটাল বাংলাদেশখ্যাত দেশটির কোন প্রতিনিধিত্ব নেই।
বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে যারা কাজ করেন বলতে গেলে তাদের ৯৯ শতাংশই এই ওয়েব সামিটে অংশগ্রহণ করেন। বর্তমান প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন এখানে মূল প্রতিপাদ্য থাকে। ভবিষ্যতের ডিজিটাল বাংলাদেশের গড়ে তোলার জন্য এ ধরনের আয়োজনে বাংলাদেশ সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মনে করেন অংশগ্রহণকারীরা। বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে তথ্যপ্রযুক্তিতে যুক্ত ব্যক্তিরা এখানে অংশগ্রহণ করতে পারেন। যদিও এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের কোন উদ্যোগ ও চোখে পড়েনি বলছিলেন ফ্রিল্যান্সার নোমাদ নিরব আহমেদ।
অপর এক বাংলাদেশী নোমাদ আরিফ হোসেন ফাহিম বলেন, এই তথ্যপ্রযুক্তি সম্মেলনে যুক্ত হওয়া শুধুমাত্র জ্ঞান লাভ বা ভোক্তা সংগ্রহ করা নয়, নতুন স্টার্টআপে বিনিয়োগ সংগ্রহ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশ সরকার যদি উদ্যোগ গ্রহণ করত তাহলে বাংলাদেশে শুরু হওয়া বিভিন্ন ছোট ছোট স্টার্টআপগুলো বিপুল পরিমাণে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে পারত এবং এই বিদেশি বিনিয়োগ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কতটা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে তা বলার অবকাশ নেই।
বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ওয়েব সামিট নিয়ে বাংলাদেশে বলতে গেলে তেমন কোন প্রচারণা নেই। সরকারের আইসিটি বিভাগ থেকে এই ধরনের কোন পদক্ষেপ নেই। এমনকি তথ্যপ্রযুক্তির এত বড় সম্মেলনটি বাংলাদেশ মিডিয়ারও তেমন একটা আগ্রহ নেই। যদিও বিশ্বের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক মিডিয়াসহ দুই হাজারের বেশি সংবাদকর্মী এই মহাসম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
পর্তুগালে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস লিসবনের সাথে বর্তমান এই তথ্যপ্রযুক্তি সম্মেলন ওয়েব সামিট ২০২৩ এ বাংলাদেশের অবস্থান ও অংশগ্রহণ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তার এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের কোন নির্দেশনা নেই বলে দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে।
তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে নতুন অভিজ্ঞতা, নিজের দেশকে বিশ্বের মাঝে উপস্থাপন এমনকি নতুন উদ্ভাবনী ব্যবসায়ের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে শত শত কোটি টাকার বিনিয়োগ গ্রহণ করেছে বিভিন্ন দেশ। তবে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের এই অষ্টম আসরে স্বল্প কিছু হাতে গোনা বাংলাদেশীদের অংশগ্রহণ থাকলেও পিছিয়ে থাকলো বাংলাদেশ।