নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনের ভোট রাত তিনটার দিকে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার ওরফে বিটু।
তিনি বলেন, আমাদের ভোট হয়েছে রাত তিনটার সময়। আমাদের যে আশ্বস্ত করেছিল, সেই আশ্বস্ত রাখেনি। বেলা ১২টার সময় আমাকে জানানো হয়েছে ভোট হয়ে গেছে। আপনি ভোট বর্জন করেন, আমি করিনি। কারণ, আমি একটি দলের (কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের) জয়েন্ট সেক্রেটারি। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভালোবাসি। তার আদর্শের রাজনীতি করেছি। জীবনটাকে উৎস্বর্গ করেছি। উনিও (শেখ হাসিনা) জানেন এই ঘটনা ঘটেছে। যারাই করেছে অর্থের জন্য আগের রাতে ভোটটা কমপ্লিট করেছে।
নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর শনিবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেলে বদরগঞ্জ উপজেলার মোস্তফাপুর সরকারপাড়া গ্রামে নিজ বাড়িতে তার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব অভিযোগ করেন।
সবকিছু জেনে-বুঝেও ভোট বর্জন করেননি উল্লেখ করে বিশ্বনাথ সরকার বলেন, অনেকগুলো ভোটকেন্দ্রে কোনো এজেন্ট ছিল না। আমার এজেন্টদের জোর করে বের করে দিয়েছে। প্রকাশ্যে দশ বছরের ছেলে একসঙ্গে ২৫-২৬টা করে সিল মেরেছে। আমার চোখে আমি দেখেছি। ওই মুহূর্তে আমার কিছুই করার ছিল না। আমার সঙ্গে যারা ছিলেন তারাও এসব দেখেছেন। আপনারা সবাই জানেন আসলে কী হয়েছে।
এসময় কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, সব কর্মীর দায়ভার নিয়ে বলছি, যেকোনো কিছু মোকাবিলায় আমি বদ্ধপরিকর। এ ক্ষেত্রে কর্মীদের যেকোনো সমস্যায় পাশে আছি, থাকবো।
কর্মী সমাবেশে বদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আজিজার রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম, তারাগঞ্জের আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম প্রমুখ।
এই স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগ প্রসঙ্গে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজির হোসেন বলেন, রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে। কোথাও কোনো অনিয়ম হয়নি। এটা করার কোনো সুযোগও ছিল না। পরাজিত প্রার্থী আগে কোনো অভিযোগ আমাকে করেননি। হঠাৎ কেন উনি এ ধরনের অভিযোগ তুলছেন, তা আমার বোধগম্য নয়।
বিশ্বনাথ সরকার ট্রাক প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন। তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সংসদ সদস্য আবুল কালাম মো. আহসানুল হক ওরফে ডিউক চৌধুরী। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ফলাফলে নৌকা প্রতীকে তিনি ৮১ হাজার ৫৯৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিশ্বনাথ সরকার পান ৬১ হাজার ৫৮৩ ভোট। এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আনিছুল ইসলাম ২৪ হাজার ৬৪০ ভোট পেয়েছেন।