ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় আগামীকাল পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। দেশের ১৬ জেলার ১১৬ উপজেলায় আগামীকাল সকাল ৮টা থেকে কোন ধরনের বিরতি ছাড়া বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচন উপলক্ষে আগামীকাল সংশ্লিষ্ট উপজেলায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি) শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
ইসি সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানান, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে কমিশন থেকে সব ধরনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এই নির্বাচনে কোন রকম অনিয়ম সহ্য করা হবে না।
শনিবার মধ্যরাত থেকে সকল ধরনের নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হয়েছে। এবারের উপজেলা নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হওয়ায় নির্বাচনকে ঘিরে ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা রয়েছে।
নির্বাচনী এলাকায় যানবাহন চলাচলে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নির্বাচনের দু’দিন আগে, নির্বাচনের দিন এবং নির্বাচনের পরের দিন মোট ৫দিন অতিরিক্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। নির্বাচনের দিন প্রতিটি সাধারণ ভোট কেন্দ্রে ১৪ জন এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৬ জন করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে ইতোমধ্যে ইসি বেশ কিছু দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিয়েছে।
গত ১০ মার্চ প্রথম ধাপে ৭৮ উপজেলায় ভোট হয়, ভোট পড়ে ৪৩ শতাংশ। প্রথম ধাপে ৮৭ উপজেলায় ভোট হওয়ার কথা থাকলেও নানা কারণে ভোট হয় ৭৮ উপজেলায়। এর আগে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান হন ২৮ জন।
দ্বিতীয় ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন ৪৮ জন নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচন উপলক্ষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে আইন-শৃঙ্খলা সমন্বয় ও মনিটরিং সেল গঠন করেছে ইসি। সেলের সদস্যরা নির্বাচনের এক দিন আগে থেকে পরের দিন পর্যন্ত ইসিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবহিত করার পাশাপাশি নির্বাচন সামগ্রী তদারকি করবেন।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি ১৮ মার্চ ভোটের দিন রেখে ১২৯ উপজেলার তফসিল ঘোষণা করে ইসি। একক প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় ৬ উপজেলায় ভোটের দরকার পড়ছে না। আরও ৬ উপজেলার ভোট পিছিয়েছে ইসি। আদালতের নির্দেশে গোবিন্দগঞ্জের নির্বাচন স্থগিত রয়েছে। এজন্য ১৮ মার্চ ১১৬ উপজেলায় ভোট হবে। দ্বিতীয় ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতদের মধ্যে রয়েছেন ২৩ জন চেয়ারম্যান, ১৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান ও ১২ জন নারী ভাইস চেয়ারম্যান।
ইসির তথ্য অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপে লড়ছেন ১ হাজার ৩১০ জন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন ৩৭৭ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৩৯ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩৯৪ জন। এসব উপজেলায় মোট ভোটকেন্দ্র ৭০৩৯টি, ভোটার ১ কোটি ৭৯ লাখ ৯ হাজার ৬ জন।
আগামী ২৪ মার্চ তৃতীয় ধাপের, ৩১ মার্চ চতুর্থ ধাপের ভোট হবে এবং পঞ্চম ও শেষ ধাপের ভোট হবে ১৮ জুন।
যেসব উপজেলায় ভোট হবে
রংপুর বিভাগের ঠাকুরগাঁও জেলার সদর, পীরগঞ্জ, হরিপুর, বালিয়াডাঙ্গী ও রাণীশংকৈল উপজেলা; রংপুর জেলার গংগাচড়া, তারাগঞ্জ, পীরগাছা, বদরগঞ্জ, কাউনিয়া ও পীরগঞ্জ উপজেলা; গাইবান্ধা জেলার গাইবান্ধা সদর, সাদুল্লাপুর, গোবিন্দগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও পলাশবাড়ী উপজেলা; দিনাজপুর জেলার কাহারোল, বোচাগঞ্জ, চিরিরবন্দর, ফুলবাড়ী, বিরামপুর, বীরগঞ্জ, নবাবগঞ্জ, বিরল, পার্বতীপুর, খানসামা ও ঘোড়াঘাট উপজেলা।
রাজশাহী বিভাগের বগুড়া জেলার সদর, নন্দীগ্রাম, সারিয়াকান্দি, আদমদীঘি, দুপচাঁচিয়া, ধুনট, শাজাহানপুর, শেরপুর, শিবগঞ্জ, কাহালু, গাবতলী ও সোনাতলা উপজেলা; নওগাঁ জেলার নওগাঁ সদর, আত্রাই, নিয়ামতপুর, সাপাহার, পোরশা, ধামইরহাট, বদলগাছী, রাণীনগর, মহাদেবপুর, পত্মীতলা ও মান্দা উপজেলা; পাবনা জেলার পাবনা সদর, আটঘরিয়া, বেড়া, ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর, ফরিদপুর, ঈশ্বরদী, সাঁথিয়া ও সুজানগর উপজেলা।
সিলেট বিভাগের সিলেট জেলার সদর, বিশ্বনাথ, দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ, কোম্পানিগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, গোপালগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলা; মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা, জুড়ী, কুলাউড়া, রাজনগর, সদর, কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা।
ঢাকা বিভাগের ফরিদপুর জেলার সদর, বোয়ালমারী, চরভদ্রাসন, সদরপুর, সালথা, আলফাডাঙ্গা, মধুখালী, নগরকান্দা ও ভাঙ্গা উপজেলা।
চট্টগ্রাম বিভাগের নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলা; চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড, সন্দ্বীপ, রাঙ্গুনিয়া, ফটিকছড়ি, মীরসরাই, রাউজান ও হাটহাজারী উপজেলা; রাঙ্গামাটি জেলার রাঙ্গামাটি সদর, লংগদু, নানিয়ারচর, কাপ্তাই, জুরাছড়ি, বাঘাইছড়ি, কাউখালী, বরকল, রাজস্থলী ও বিলাইছড়ি উপজেলা; বান্দরবান জেলার সদর, রোয়াংছড়ি, আলীকদম, থানচি, লাম, রুমা ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা; খাগড়াছড়ি জেলার সদর, মানিকছড়ি, লক্ষ্মীছড়ি, দীঘিনালা, মহালছড়ি, পানছড়ি, মাটিয়াঙ্গা ও রামগড় উপজেলা এবং কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলা।