ভুয়া বিলের মাধ্যমে ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা আত্মসাতের দুই মামলায় ছয় প্রকৌশলীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদন যাচাই বাছাই করে কমিশন এই চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে। শিগগিরই তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মোজাম্মিল হোসেন চার্জশিট দু’টি আদালতে দাখিল করবেন বলে দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন।
দুদক সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ২৬ মার্চ সিলেটের কোতয়ালী (সিএমপি) থানায় মামলা দু’টি দায়ের করা হয়। ঘটনার সময় সব আসামিই সিলেট সড়ক বিভাগে কর্মরত ছিলেন। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, সিলেট সড়ক বিভাগের আওতাধীন ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে মৌলভীবাজার-রাজনগর-ফেঞ্চুগঞ্জ-সিলেট জাতীয় মহাসড়কে সাতটি কালভার্টের অ্যাপ্রোচ সড়কের বিভিন্ন অংশে প্রকল্পের সম্পাদিত কাজ ২০১৭ সালের ২০ সেপ্টেম্বর নিরপেক্ষ প্রকৌশল টিমের মাধ্যমে সরেজমিনে পরিমাপ করে দুদক। পরিমাপকালে ৬২ লাখ ৬১ হাজার ২৬০ টাকার কাজ পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, উক্ত প্রকল্পের সম্পাদিত কাজের গুণগত মান স্পেসিফিকেশনের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ মর্মে ল্যাবরেটরি টেস্টেও প্রমাণিত হয়। কিন্তু সড়ক বিভাগের প্রকৌশলীগণসহ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী ঠিকাদার পারস্পরিক সহযোগিতায় সেই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। যে কারণে ঢাকা জোনের সড়ক বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. রাসেল, মিরপুর উপকরণ পরীক্ষা ও রক্ষণাবেক্ষণের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তানভীর হোসেন, ঢাকার তেজগাঁওয়ের সড়ক ভবনের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মনিরুল ইসলাম ও ঠিকাদার লুৎফুর রহমানের চার্জশিট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, সিলেট সড়ক বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়িত ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে সিলেট সড়ক বিভাগের অধীন সিলেট সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ২০ পয়েন্ট ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বিভিন্ন অংশে প্রকল্পের সম্পাদিত কাজ দুদক সরেজমিনে পরিমাপ করে ১ কোটি ১৩ লাখ ২৩ হাজার ৪১৬ টাকার কাজের অস্তিত্ব পায়নি। তাছাড়া, উক্ত প্রকল্পের সম্পাদিত কাজের গুণগত মান স্পেসিফিকেশনের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ মর্মে ল্যাবরেটরি টেস্টে প্রমাণিত হয়। আসামিরা অসম্পাদিত কাজকে সম্পাদনকৃত কাজ দেখিয়ে মিথ্যাভাবে পরিমাপ বহি লিপিবদ্ধ করে ও উক্ত টাকার বিল পরিশোধ করে অর্থ আত্মসাৎ করে। যে অভিযোগে সিলেট সড়ক বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মাসুম আহমেদ, উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন, মিরপুর সেতু রক্ষণাবেক্ষণ ও কার্যক্রম বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল বরকত মো. খুরশীদ আলম, উপকরণ পরীক্ষা ও রক্ষণাবেক্ষণ নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তানভীর হোসেন, তেজগাঁও ঢাকার নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মনিরুল ইসলাম ও ঠিকাদার লুৎফুর রহমানের বিরুদ্ধে পৃথক আরও একটি চার্জশিট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।