প্রাইমমুভার ও সিঅ্যান্ডএফ শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে অচল চট্টগ্রাম বন্দর

প্রাইমমুভার ও সিঅ্যান্ডএফ শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে অচল চট্টগ্রাম বন্দর

অনলাইন ডেস্ক

 

নতুন ট্যারিফ শিডিউলে পণ্যবাহী গাড়ি ও সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারীদের গেটপাস ফি বাড়ানোর প্রতিবাদে প্রাইমমুভার, ট্রেইলার মালিক ও সিঅ্যান্ডএফ শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে অচল হয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর।

রোববার (১৯ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া এই কর্মবিরতির ফলে বন্দর থেকে সব ধরনের পণ্য ও কনটেইনার আনা-নেওয়া বন্ধ রয়েছে। বন্দরের সবগুলো গেট বন্ধ রয়েছে। কোনো ট্রাক বা কাভার্ডভ্যান বন্দরে প্রবেশ করছে না। নিত্যদিনের মতো গেটগুলোতে যানজট বা ভিড় নেই।

শ্রমিকদের দাবি, নতুন ট্যারিফ অনুযায়ী ভারী গাড়ির প্রবেশ ফি ৫৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৩০ টাকা এবং সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারীদের গেটপাস ফি এক লাফে ১১৫ টাকা করা হয়েছে, যা তারা ‘অযৌক্তিক’ বলে দাবি করছেন।

কর্মসূচি পালন করছে প্রাইমমুভার, ট্রেইলার মালিক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন, পাশাপাশি একই দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে আন্তঃজেলা ট্রাক মালিক সমিতি। তবে সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারীদের চার ঘণ্টার কর্মবিরতি দুপুর ১টা পর্যন্ত চলার কথা রয়েছে। এ অবস্থায় বন্দরের কার্যক্রমে এক ধরনের স্থবিরতা নেমে এসেছে। দুপুরে এই প্রতিবেদন লেখার সময় শ্রমিক প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট পক্ষদের সঙ্গে বৈঠক করছেন বন্দর চেয়ারম্যান।

সূত্র জানায়, ভারী গাড়ির প্রবেশ ফি বাড়ানোর কারণে ব্যক্তিমালিকানাধীন ট্রেইলারগুলো কনটেইনার পরিবহন বন্ধ রেখেছে। এসব ট্রেইলার সাধারণত আন্তঃজেলা রুটে কনটেইনার পরিবহন করে। যদিও কিছু অফডক বা ডিপোর ট্রেইলার বিচ্ছিন্নভাবে চলাচল করছে।

চট্টগ্রাম প্রাইমমুভার ও ফ্লাটবেড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, কর্মবিরতি বা ধর্মঘট নয়, প্রাইমমুভার মালিকরা ৫৭ টাকার পাস ২৩০ টাকা করায় গাড়ি চালানো বন্ধ রেখেছেন।

চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্ট এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, সিঅ্যান্ডএফ মালিক ও শ্রমিকরা সকাল ৯টা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে চার ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করছেন।

এদিকে, প্রাইমমুভার মালিকদের ট্রেইলার ও পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ এবং সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের কর্মবিরতিতে উদ্বেগ জানিয়েছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। তাদের আশঙ্কা, এভাবে চলতে থাকলে পুরো বন্দরের কার্যক্রম অচল হয়ে পড়বে।

এর আগে শনিবার (১৮ অক্টোবর) অতিরিক্ত ট্যারিফ আরোপের প্রতিবাদে পোর্ট ইউজার্স ফোরামের এক সভায় সংগঠনের সভাপতি আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে চট্টগ্রাম বন্দর বন্ধের হুঁশিয়ারি দেন।

বন্দরের ৫ নম্বর গেটে অবস্থানরত সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারী মোহাম্মদ সেলিম বলেন, আমি ৩৫ বছর ধরে বন্দরে কাজ করছি। প্রথমে গেটপাস ৫০ পয়সা ছিল, ধীরে ধীরে ১০ টাকা হয়েছে। এখন এক লাফে ১১৫ টাকা করা হয়েছে, এজন্যই আমরা কর্মবিরতি পালন করছি। কোনো পণ্য খালাস বা জাহাজীকরণ হচ্ছে না।

একইভাবে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক মোবারক আলী বলেন, আমরা রাজস্ব আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখি। অথচ আমাদের গেটপাস ফি ১১৫ টাকা করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। বন্দরের উচিত এই ফি একেবারে মওকুফ করা।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, ট্রেইলার ও পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলে কিছু স্থানে বাধা দেওয়া হচ্ছে। তবে বন্দরের হ্যান্ডলিং ও অপারেশন কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।

বাংলাদেশ শীর্ষ সংবাদ সারাদেশ