জাতীয় ডেস্ক:
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের একাধিক ইউজার আইডি ব্যবহার করে কন্টেইনার খালাসের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ১০ জন রাজস্ব কর্মকর্তা এবং পাঁচ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এই মামলা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
দুদকের উপপরিচালক মো. আক্তারুল ইসলাম এই মামলার সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেছেন। শিগগিরই মামলা দায়ের করা হবে বলে তিনি জানান। মামলার আসামিরা চট্টগ্রাম কাস্টমসের সাবেক ও বর্তমান ১০ জন রাজস্ব কর্মকর্তা, পাশাপাশি পাঁচ ব্যবসায়ী। তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার আসামিদের মধ্যে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের সাবেক রাজস্ব কর্মকর্তারা হলেন— মো. জয়নাল আবেদীন, মো. জাহাঙ্গীর আলম, বাসুদেব পাল, মো. আশরাফুল ইসলাম, মো. আব্দুর রাজ্জাক, দিদারুন নবী, সাবেক সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রনি বড়ুয়া, এবং মো. আরিফুর রহমান। বর্তমান রাজস্ব কর্মকর্তাদের মধ্যে ফারহানা আকরাম ও মো. মাহবুবুর রহমানও মামলার আসামি।
ব্যবসায়ীদের মধ্যে রয়েছেন— অন্তরা করপোরেশনের স্বত্বাধিকারী মো. মুশতাক খান, মেসার্স এ. অ্যান্ড জে. ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের অংশীদার মো. আবদুল জলিল আকন ও মো. আলতাফ হোসেন, মেসার্স প্যান বেঙ্গল এজেন্সির মো. সেলিম, এবং জিআর ট্রেডিং করপোরেশন সিঅ্যান্ডএফ লিমিটেডের মো. আব্দুল রহিম।
দুদক জানায়, এসব আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৬, ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১০৯ ধারায় মামলা করা হবে। এসব ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে আত্মসাৎ, প্রতারণা, জাল নথি প্রণয়ন, ক্ষমতার অপব্যবহার ও মানি লন্ডারিংয়ের মতো গুরুতর অপরাধের বিরুদ্ধে।
এছাড়া দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫ (২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর সংশ্লিষ্ট ধারায়ও মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বন্দরে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে একাধিক ইউজার আইডি হ্যাক করে প্রায় চার হাজার বিল অব এন্ট্রিতে কন্টেইনার খালাসের ঘটনা ঘটে। ২০১৮ সালে এই ঘটনা ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছিল এবং এখনো এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ তদন্ত বিষয়।
এই মামলা চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অনিয়ম এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের একটি শক্ত পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। মামলার বিচারাধীন হলে এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে সতর্কতাও তৈরি হবে এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়িত্বশীলতার বিষয়ে নতুন বার্তা দেওয়া হবে।


