জাতীয় ডেস্ক
ফেনী জেলার অতিরিক্ত নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলমসহ তিনজনের বিরুদ্ধে জাল জন্মনিবন্ধন ও ভুয়া তথ্য ব্যবহার করে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরির অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (১২ নভেম্বর) চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ মামলাটি দায়ের করেন দুদকের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক অংটি চৌধুরী। মামলার অন্যান্য আসামি হলেন কক্সবাজারের বাসিন্দা আবদুল জলিল (৫০) এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক জন্মনিবন্ধন সহকারী পিন্টু কুমার দে।
দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এর উপপরিচালক সুবেল আহমেদ জানান, অভিযুক্তরা পরস্পরের যোগসাজশে জালিয়াতির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ নথি তৈরি করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তিনি জানান, তদন্ত এখনো চলমান এবং আরও কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে সেটিও খতিয়ে দেখা হবে।
দুদকের এজাহার অনুযায়ী, আবদুল জলিলের জন্ম, নাগরিকত্ব বা তার বাবা-মায়ের পরিচয় সংক্রান্ত কোনো সরকারি নথি পাওয়া যায়নি। যথাযথ নাগরিকত্বের কাগজপত্র ছাড়া ২০১১ সালের ২২ জুলাই তিনি জাল জন্মনিবন্ধন তৈরি করেন। পরে ২০১৭ সালের মে মাসে একই সনদ ভুয়া স্বাক্ষর ব্যবহার করে পুনরায় নবায়ন করা হয়।
মামলায় বলা হয়েছে, জন্মনিবন্ধন সনদ প্রস্তুত ও অনুমোদনে তৎকালীন বন্দর থানার নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল আলম এবং জন্মনিবন্ধন সহকারী পিন্টু কুমার দে আবদুল জলিলকে সহায়তা করেন। পরবর্তীতে এই জাল জন্মনিবন্ধনের তথ্য ব্যবহার করে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে মিথ্যা পরিচয় ও ভুয়া ঠিকানা প্রদানের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করা হয়। এনআইডি আবেদন ফরমে তার বাবা-মা ও স্ত্রীর পরিচয়ের ঘর ফাঁকা ছিল। এছাড়া, তিনি যে ঠিকানাগুলো স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করেছেন, সেসব ঠিকানায় তার বসবাসের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
দুদকের ফরেনসিক পরীক্ষায় জন্মনিবন্ধন সনদে থাকা স্বাক্ষর এবং নিবন্ধকের স্বাক্ষর জাল হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।
এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।


