জেলা প্রতিনিধি
পঞ্চগড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের গ্রুপচ্যাটকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে সোহান আলী (১৫) নামে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রকে দলবদ্ধভাবে মারধর ও ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। ঘটনা সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে সদর উপজেলার অমরখানা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে ঘটেছে। স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে ১২ কিশোরকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, প্রায় ১০–১২ দিন আগে একটি ফেসবুক গ্রুপে সোহানের সঙ্গে কয়েকজন কিশোরের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। সোমবার পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে পরিকল্পিতভাবে তারা সোহানকে ঘিরে ফেলে। এ সময় নূর নামের এক কিশোর সাইকেলের ফ্রিহুইল দিয়ে সোহানের মাথায় আঘাত করলে কাইয়ুম নামে আরেকজন ছুরি দিয়ে তার বুকের দিকে আঘাত করার চেষ্টা করে। সোহান হাত বাড়িয়ে আঘাত ঠেকানোর সময় বাম হাতের কবজির রগ কেটে যায়। পাশাপাশি অন্যান্যরা তাকে কিল, ঘুষি ও লাথি মারে।
আহত সোহানকে প্রথমে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সোহানের পরিবারের দাবি, এই হামলার উদ্দেশ্য হত্যার ছিল। তারা ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেছেন।
স্থানীয়দের সহায়তায় ১২ কিশোরকে আটক করে বিদ্যালয়ে রাখা হয়। অমরখানা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলামসহ কয়েকজন শিক্ষক তাদের উত্তেজিত জনতার হাত থেকে উদ্ধার করেন। পরে পুলিশ এসে তাদের হেফাজতে নিয়ে হামলায় ব্যবহৃত সরঞ্জাম জব্দ করে।
আটক কিশোরদের বয়স ১৪ থেকে ১৬ বছরের মধ্যে এবং তারা স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সপ্তম থেকে নবম শ্রেণির ছাত্র। তাদের বাড়ি সদর উপজেলার সাতমেড়া ইউনিয়ন, জগদল বাজার, খালপাড়া, প্রধানপাড়া, বানিয়াপাড়া ও চেকরমারী এলাকায়। তারা বিপি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, কালেক্টরেট স্কুল, জগদল উচ্চ বিদ্যালয় ও জগদল আলিম মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ হিল জামান জানান, আটকদের নারী ও শিশু ডেস্কে রাখা হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ঘটনার মাধ্যমে কিশোরদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সম্পর্কিত বিরোধ ক্রমবর্ধমান ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আরও সজাগতার প্রয়োজনীয়তা প্রমাণিত হয়।


