জাতীয় ডেস্ক
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়েছে। বৈঠকটি প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে তিনি বলেছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে যেকোনো মূল্যে দেশের আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে হবে।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় দেশের চলমান নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ, আসন্ন বড়দিন ও ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনের সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা, এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে গৃহীত নিরাপত্তা-সংক্রান্ত পদক্ষেপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
বৈঠকে বিশেষভাবে আলোচনার বিষয় ছিল জুলাই যোদ্ধা শহিদ শরীফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ড। হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহভাজনদের গ্রেফতার ও তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর রিপোর্ট উপস্থাপন করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি দুটি জাতীয় দৈনিক এবং দুটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যালয়ে হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজনদের ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে ৩১ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে।
এ সংক্রান্ত অভিযান সোমবার সকাল পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চালানো হয়েছে, যার ফলে কমপক্ষে ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন মো: কাশেম ফারুকি, মো: সাইদুর রহমান, রাকিব হোসেন, মো: নাইম, মো: সোহেল রানা, এবং মো: শফিকুল ইসলাম। পুলিশ জানিয়েছে, বাকি শনাক্তকৃত সন্দেহভাজনদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে।
বৈঠকে চট্টগ্রামে ভারতের সহকারী হাইকমিশনারের বাসভবনের নিকটে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা সংক্রান্ত ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তিনজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে নির্দেশ দিয়েছেন, ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডে জড়িত এবং অন্যান্য বেআইনি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের দ্রুততম সময়ে গ্রেফতার করতে।
নিরাপত্তা সংক্রান্ত এই বৈঠক দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের তদারকি এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য গৃহীত পদক্ষেপগুলোর প্রেক্ষাপটে গুরুত্ববহ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কর্মকর্তারা জানান, নিরাপত্তা বাহিনী নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও অভিযানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
এই বৈঠকের ফলাফল আগামী দিনে দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং নির্বাচনের পূর্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সচেতন রয়েছে যে, বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক ইস্যুর প্রেক্ষিতে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে এবং তা রোধে সব ধরনের প্রস্তুতি অব্যাহত থাকবে।


