জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে ২২০ রানের দুর্দান্ত জয় পেয়েছে মুমিনল হক সৌরভের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাসকিন আহেমদ, সাদমান ইসলাম ও নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটে-বলের নৈপুণ্যে এ জয় পায় টাইগাররা।
জিম্বাবুয়ের হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমেই বিপর্যয়ে পড়ে যায় বাংলাদেশ। ১৩২ রানে ৬ উইকেট হারানো বাংলাদেশ দলের হাল ধরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৪৬৮ রান সংগ্রহ করে টাইগাররা।
সপ্তম উইকেটে লিটন দাসের সঙ্গে ১৩৮ রানের জুটি গড়েন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এরপর নবম উইকেটে পেস বোলার তাসকিন আহমেদের সঙ্গে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৯১ রানের রেকর্ড জুটি গড়েন রিয়াদ।
৪১৩ মিনিট ব্যাটিং করে ১৭টি চার ও একটি ছক্কায় টেস্ট ক্যারিয়ার সেরা ১৫০ রান করে অপরাজিত থাকেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দলের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯৫ রান করেন লিটন। ৭৫ রান করেন তাসকিন আর ৭০ রান করেন অধিনায়ক মুমিনুল হক সৌরভ।
টাইগারদের করা ৪৬৮ রানের জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে ২ উইকেটে ২২৫ রান করা জিম্বাবুয়ে এরপর সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজের ঘূর্ণি বলে বিভ্রান্ত হয়ে ২৭৬ রানে অলআউট হয়। দলের হয়ে ওপেনার কাইতানো করেন ৮৭ রান। ৮১ রান করেন অধিনায়ক ব্রান্ডন টেইলর। বাংলাদেশ দলের হয়ে মিরাজ শিকার করেন ৫ উইকেট। আর ৪ উইকেট নেন সাকিব আল হাসান।
প্রথম ইনিংসে ১৯২ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে উদ্বোধনীতে সাইফ হাসানকে সঙ্গে নিয়ে ৮৮ রানের জুটি গড়েন সাদমান ইসলাম অনিক। ৯৫ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ৪৩ রান করে ফেরেন সাইফ হাসান।
এরপর ওয়ান ডাউনে ব্যাটিংয়ে নামা নাজমুল হোসেন শান্তকে সঙ্গে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন ১৯৬ রানের জুটি গড়েন সাদমান। এই জুটিতেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি করেন ২৬ বছর বয়সী এই তরুণ ওপেনার। ১৮০ বলে ৮টি বাউন্ডারির সাহায্যে শত রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন সাদমান।
সাদমান সেঞ্চুরি করার পর একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ১০৯ বলে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
৪৭৬ রানের বড় লিড হওয়ার পর দলীয় ২৮৪/১ রানে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ।
হারারে টেস্টে ওয়ানডের মতো আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে ১১৮ বলে ৫টি চার ও ৬টি ছক্কায় অপরাজিত ১১৭ রান করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ১৯৬ বল মোকাবেলা করে ৯টি বাউন্ডারির সাহায্যে অপরাজিত ১১৫ রান করেন ওপেনার সাদমান।
৪৭৭ রানের বিশাল টার্গেট তাড়া করতে নেমে শুরুতেই বিপাকে পড়ে যায় জিম্বাবুয়ে। ১৫ রানে জিম্বাবুয়ের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন তাসকিন আহমেদ।
এরপর ওপেনার কাইতানোর সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৯৫ রান যোগ করেন টেইলর। দলীয় ১১০ রানে ৭৩ বলে ১৬টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৯২ রান করে মিরাজের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন টেইলর।
মেহেদী হাসান মিরাজের অফ স্পিনে বিভ্রান্ত হয়ে পরপর দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি বঞ্চিত হন জিম্বাবুয়ের এই অধিনায়ক।
প্রথম ইনিংসে ৮১ রানে আউট হওয়া টেইলর দ্বিতীয় ইনিংসে ফেরেন ৯২ রানে। মাত্র ৮ রানের জন্য দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করতে পারেননি এই তারকা ব্যাটসম্যান।
চতুর্থ দিনের শেষ বিকালে সাকিব আল হাসানের স্পিনের শিকার হন জিম্বাবুয়ের ওপেনার কাইতানো। ১০২ বল মোকাবেলা করে মাত্র ৭ রানে ফেরেন এই ওপেনার। তার বিদায়ের মধ্য দিয়ে ১৩২ রানে প্রথমসারির ৩ ব্যাটসম্যানের উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।
রোববার শেষ দিনে ১৪০/৩ রান নিয়ে ফের ব্যাটিংয়ে নামে জিম্বাবুয়ে। এদিন মধ্যাহ্ন বিরতির আগে মিরাজের ঘূর্ণি আর তাসকিনের গতির মুখে পড়ে ২৭ ওভারে মাত্র ৩৬ রান সংগ্রহ করতেই জিম্বাবুয়ে হারায় ৪ উইকেট। দুটি করে উইকেট নেন মিরাজ ও তাসকিন।
বিরতি থেকে ফিরে লেজের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন ডোনাল্ড ত্রিপানো। দলীয় ১৯৮ রানে তাসকিন আহমেদের শর্ট বলে স্লিপে ফিল্ডিং করা সাকিবের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন ভিক্টর নিয়াচি।