নিজস্ব প্রতিবেদক
একাদশ সংসদের ১৫তম অধিবেশনে রোববার সমাপনী বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি
বাংলাদেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সেটা মোকাবিলা করেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘জনগণ প্রতিটি নির্বাচনে বিজয়ী করার কারণে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছি। এই কাজ আমরা সহজভাবে করতে পেরেছি কিন্তু তা নয়। এই যাত্রাপথ কখনো সুগম ছিল না। আমাদের অনেক প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে হয়েছে। অনেক সমালোচনা শুনতে হয়েছে। আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা, গাড়িতে আগুন, অগ্নি সন্ত্রাস, হরতাল, অবরোধ- সেই অবরোধ বিএনপি এখনো প্রত্যাহার করেনি।’
আজ রোববার একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে সংসদ নেতা এসব কথা বলেন। বক্তব্যের প্রায় পুরো অংশজুড়েই বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশে থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সার্বিক প্রেক্ষাপট এবং এ ক্ষেত্রে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেক রকম চক্রান্ত ষড়যন্ত্র থাকবে। সেগুলো মাথায় নিয়ে আমাদের চলতে হবে। যতই সমালোচনা হোক বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি এবং করে যাব। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাবে।’
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নের জন্য এটি সম্ভব হয়েছে। জনগণের সার্বিক উন্নয়নে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়েছি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকীকে এই অর্জন আমাদের জন্য অনেক গৌরবের। এটি বাঙালি জাতির বিরল সম্মান ও অনন্য অর্জন। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে পরিকল্পিতভাবে এগিয়েছি বলেই আমরা অর্জন করতে পেরেছি। অনেক সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়েছে। সমালোচনায় আমরা কান না দিয়ে অভীষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগিয়েছি। সঠিক দিক নির্দেশনা নিয়েই রাষ্ট্র পরিচালনা করি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে স্বাধীনতার ১০ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হতো। জাতির পিতাকে হত্যার পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল জেনারেল জিয়া, জেনারেল এরশাদ বা বেগম জিয়ার কথা বলেন, তাঁরা তো কেউ দেশকে উন্নত করতে চাননি। ক্ষমতা তাঁদের কাছে ছিল ভোগের বস্তু ও বিলাসবহুল জীবন। আর তাঁরা ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে দলে টেনে একটি শ্রেণি তৈরি করল। সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কেউ এগিয়ে আসেনি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশে যাওয়ার কারণে আমরা সুবিধা যেমন পাব, তেমনি স্বল্পোন্নত দেশের সব সুযোগগুলো পাব না। অবশ্য আমরা ২০২৬ সাল পর্যন্ত সময় চেয়ে নিয়েছি করোনাকালের সময়ের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য। এটা সারা বিশ্বে বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।’
বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারের হত্যার প্রসঙ্গ টেনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এ সময় আবেগপ্রবণ হয়ে যান। তিনি বলেন, ‘যাদের জন্য জাতির পিতা সারাটা জীবন ত্যাগ স্বীকার করলেন সেই বাঙালি জাতির হাতে তাঁর জীবন দিতে হলো।’
এ সময় দলের দায়িত্ব নেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ‘সবকিছু জেনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পিতার স্বপ্ন পূরণের জন্য আমি দেশে ফিরে আসি। সেই লক্ষ্য পূরণে কাজ করে যাচ্ছি। বারবার আঘাত এসেছে কিন্তু কেন জানি না আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বারবার বাঁচিয়েছেন। সেবা করার সুযোগ পেয়েছি বলেই একটা মর্যাদায় বাংলাদেশকে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছি।’