কিছু মানুষ থাকেন যারা ইতিহাসে উদ্ধৃত হন, কেউ কেউ আছেন যারা ইতিহাসের অংশ হয়ে যান; আর এমন সামান্য কিছু মানুষ আছেন যারা নিজেরাই ইতিহাসের স্রষ্টা হয়ে যান। বঙ্গবন্ধু এই শেষোক্ত পর্যায়েরই মানুষ। যাকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়েছে ইতিহাস, সৃষ্টি হয়েছে গাঙ্গেয় বদ্বীপের একটি বিশাল জাতির জন্মগাথা। এই একটি মানুষ যার কর্মজীবনের প্রতিটি স্তরে রচিত হয়েছে এক মহান মুক্তিসংগ্রামের অমর পঙ্ক্তিমালা। বাঙালির হাজার হাজার বছরের ইতিহাসে কখনো তার আত্মপরিচয়ের সন্ধান ছিল না, কখনো তার আত্মপরিচয়ের ইতিহাস ছিল না। এ মহান মানুষটি এই জাতির অপ্রাপ্তির যাতনার অবসান ঘটিয়েছেন। এখন বাঙালি জাতির একটা ঠিকানা আছে, একটা জাতীয় সংগীত আছে, একটা পতাকা আছে, একটা স্বাধীন সার্বভৌম ভূখণ্ড আছে। এসব কিছুর পেছনে যার অখণ্ড অবদান, তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে বিশ্বনন্দিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
আমরা ইতিহাসে অনেক রাষ্ট্রনায়কের রাষ্ট্র পরিচালনার কিংবা সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনেক কাহিনি শুনেছি। পাঠ করেছি অনেক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আন্তর্জাতিক নেতৃবৃন্দের নানা ধরনের নির্দেশ। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনবদ্য ভূমিকা সমস্ত তুলনার ঊর্ধ্বে। আমরা এমন একটা সময় নিয়ে আলোচনা করছি, যে সময়টা একটি নতুন জাতির আবির্ভাবের পূর্বক্ষণ, একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থার মধ্যে নতুন শক্তির স্ফুরণের লগ্ন। পুরোনো রাষ্ট্রব্যবস্থার অচলায়তন চূর্ণবিচূর্ণ করে নতুন রাষ্ট্র নির্মাণের অসম সাহসী সন্ধিক্ষণ। ঠিক সেই মুহূর্তে অত্যন্ত নির্মোহভাবে যিনি নির্ণয় করতে পারেন ইতিহাসের গতিমুখ, তাকে আমরা কোন অভিধায় অভিষিক্ত করব? তিনি তো মানুষের সাধারণ গুণাবলির আরও ঊর্ধ্বে অসাধারণ মহিমায় উদ্ভাসিত এক মহামানব। যিনি সেই উত্তাল সময়ে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের অনবদ্য এক ভাষণের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের গতিমুখ নির্ণয় করলেন। যার ধারাবাহিকতায় বিশ্বের মানচিত্রে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম দেশের অভ্যুদয় ঘটল।বিস্তারিত