দেখামাত্র গুলির নির্দেশ বার্তা ফাঁসকারী সেই পুলিশ সদস্য গ্রেফতার

দেখামাত্র গুলির নির্দেশ বার্তা ফাঁসকারী সেই পুলিশ সদস্য গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

 

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) সব সদস্যের উদ্দেশে ওয়াকিটকিতে কমিশনার হাসিব আজিজের দেওয়া বক্তব্য ফাঁস করার অভিযোগে অমি দাশ নামে এক কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রবিবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে খুলশী থানা পুলিশ।

অমি দাশ পুলিশের টেলিকম ইউনিটের কনস্টেবল। তিনি প্রেষণে সিএমপির খুলশী থানায় কর্মরত রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মাহমুদা বেগম সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

১১ আগস্ট রাতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নগরের বন্দর থানার এক কর্মকর্তা আহত হন। এরপর ১২ আগস্ট সিএমপির সব সদস্যের উদ্দেশে ওয়াকিটকিতে দেওয়া এক বার্তায় কমিশনার হাসিব আজিজ অস্ত্রধারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেন। ওয়াকিটকিতে এই নির্দেশনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। কমিশনারের ওই বার্তা ফাঁস হওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েন চট্টগ্রাম নগরের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তারা। এর পেছনে কে বা কারা জড়িত, তা তদন্তে নামে পুলিশ।

নগরের সল্টগোলা ক্রসিং এলাকার ঈশান মিস্ত্রির হাটসংলগ্ন সড়কে ১১ আগস্ট রাতে বিক্ষোভ মিছিল করেন আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এ সময় বিক্ষোভকারীদের হামলায় পুলিশের বন্দর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু সাঈদ গুরুতর আহত হন। পরদিন রাতে ওয়াকিটকিতে সিএমপির সব সদস্যের উদ্দেশে মৌখিক নির্দেশনায় কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, ‘২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে যে অস্ত্রের প্রাধিকার ছিল, ওই প্রাধিকার অনুযায়ী থানার মোবাইল পার্টি, প্যাট্রোল পার্টি, ডিবির টিমসমূহ ও সকল ফোর্স অস্ত্র ক্যারি করবে। আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়া এবং লাইভ অ্যামুনিশন ছাড়া কোনো প্যাট্রোল পার্টি, মোবাইল পার্টি, ডিবির পার্টি, চেকপোস্ট পার্টি বের হবে না। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগের প্রাধিকার অনুযায়ী লাইভ অ্যামুনিশন ছাড়া কেউ বের হবে না। প্রাধিকার অনুযায়ী অস্ত্র, গোলাবারুদ ও স্যুট পরে তারপর ডিউটিতে যাবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘শুধু রাবার বুলেট দিয়ে কাজ হচ্ছে না। বন্দরে (বন্দর থানা) একজন এসআই গুরুতর আহত হয়েছেন। আরেক দিন আরো বড় দুর্ঘটনা ঘটবে। বন্দর থানার অফিসার যে অবস্থায় পড়েছেন, ওই পরিস্থিতিতে পড়লে যেন লাশ ছাড়া মোবাইল পার্টি, প্যাট্রোল পার্টি ফেরত না আসে। পুলিশের কোনো টহল পার্টির সামনে অস্ত্র বের করলে, আই রিপিট, সেটা ধারালো অস্ত্র হতে পারে কিংবা আগ্নেয়াস্ত্র হতে পারে— অস্ত্র বের করা মাত্র গুলি হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই, সবাইকে বলছি। আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার, দণ্ডবিধি ৯৬ থেকে ১০৬ পর্যন্ত, আত্মরক্ষার ব্যক্তিগত অধিকার সব পুলিশ অফিসারের আছে। অস্ত্র কিংবা কোপ দেওয়ার আগে অস্ত্র বের করা মাত্র গুলি হবে। সরকারি গুলির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।’

বাংলাদেশ শীর্ষ সংবাদ সারাদেশ