করোনা মহামারি থেকে বাঁচতে এখন প্রধান লক্ষ্য এর টিকা তৈরি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইতোমধ্যে করোনা টিকা তৈরিতে এগিয়ে গিয়েছে। এর থেকে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতও। তবে ভারতে যে টিকা তৈরি হচ্ছে তা সবার আগে বাংলাদেশ পাবে বলে জানানো হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি ঢাকা সফরে এসে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, তার দেশে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরি হলে বাংলাদেশ অগ্রাধিকার পাবে।
ভারতের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার ঢাকা সফরের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই খবর ঘোষণা করেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।
তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষেত্রে ভারত বিশ্বের শীর্ষে। বিশ্বের ৬০ শতাংশ ভ্যাকসিনই ভারতে তৈরি হয়। করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির পরে বন্ধু ও সহযোগী দেশগুলোকে দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও কার্পণ্য করবে না ভারত। স্বাভাবিকভাবেই এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ থাকবে অগ্রাধিকারের তালিকায়।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, শ্রিংলা ঢাকায় পৌঁছে বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিশেষ বার্তাবাহক হয়ে তিনি ঢাকা সফরে গিয়েছেন।
কী সেই বার্তা? প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এই কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেও বন্ধুত্ব ও সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তা। করোনাকালে বন্ধুদের মধ্যে যোগাযোগের পথগু সীমিত হয়ে উঠেছে। সহযোগিতা ও বন্ধুত্বে তার কোনও প্রভাব যাতে না পড়ে, সেটাই নরেন্দ্র মোদীর বার্তা।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকার যৌথ উদ্যোগে তৈরি ভ্যাকসিনের পেটেন্ট নিয়ে ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট ভ্যাকসিন উৎপাদন করছে। এই ভ্যাকসিনটি তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে রয়েছে।
কিন্তু ভারতে উৎপাদিত অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন বাংলাদেশ কোন উপায় পাবে সেটা ভারতের সঙ্গে ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের চুক্তির ওপর নির্ভর করবে বলে জানান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি আ ফ ম রুহুল হক।
তিনি বলেন, ‘অক্সফোর্ড যদি ভারতকে অনুমোদন দেয় বিক্রি করতে, তাহলে তারা বাংলাদেশের কাছে বিক্রি করবে। এটা নির্ভর করছে অক্সফোর্ডের ওই কোম্পানি এবং ভারতের মধ্যে কী দেন-দরবার হয়েছে, সেটার ওপর।’
যেহেতু ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তাই ওই টিকা বাংলাদেশকে দেওয়ার মতো অনুমোদন তাদের রয়েছে বলে আশা করেন আ ফ ম রুহুল হক।
ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে হর্ষবর্ধন শ্রিংলার বৃহস্পতিবারের বৈঠকটি হলো সফরের উল্লেখযোগ্য বিষয়। এখানে যে বিষয়টি মূলত আলোচনায় উঠে আসছে তা হলো ভারত বাংলাদেশকে করোনার ভ্যাকসিন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেবে।
তবে এই ভ্যাকসিনটি ভারতের আবিষ্কার নয়, অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের কথাই তারা বলছে। ভারতে একটি প্রতিষ্ঠান এই ভ্যাকসিনের সঙ্গে যুক্ত। বাংলাদেশে এর ট্রায়ালের কথা হয়েছে। বাংলাদেশও সম্মতি দিয়েছে। যদিও চীনা ভ্যাকসিনের ট্রায়াল আটকে আছে।