করোনা মহামারী রোধে ১০ আগস্ট পর্যন্ত বিধিনিষেধ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সেই সাথে ভ্যাকসিন নেয়ার শর্তে ১১ আগস্ট থেকে দোকানপাট খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ১১ তারিখ থেকে মানুষের চলাচলের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন নেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া বের হলে শাস্তির বিধান করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সভায় সভাপতিত্ব করেন। বেলা সোয়া ১১টায় মন্ত্রিপরিষদের সভাকক্ষে সভাটি শুরু হয়। করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক দুপুর আড়াইটার দিকে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব আনোয়ারুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ভার্চুয়ালি মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা যুক্ত ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যাকসিন ছাড়া ১৮ বছরের বেশি বয়সের কোনো মানুষ মুভমন্ট করলে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। সরকার দরকার হলে অধ্যাদেশ জারি করেও শাস্তি দেয়া হতে পারে। যেহেতু এখন সংসদ অধিবেশন নেই, তাই অধ্যাদেশ জারি করা হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ৭ দিনে ১ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করেছে। সুতরাং ভ্যাকসিন ছাড়া ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে কেউ রাস্তায় বের হলে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।’
এর আগে গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ দেয় সরকার। সেই বিধিনিষেধের মেয়াদ আগামী ৫ আগস্ট রাত ১২টায় শেষ হওয়ার কথা ছিল। আজ আবার নতুন করে ১০ তারিখ পর্যন্ত বিধিনিষেধ বাড়ানো হলো।
বিধিনিষেধে সব ধরনের গণপরিবহন, সরকারী-বেসরকারী অফিস বন্ধ আছে। খাদ্যপণ্য উৎপাদন-প্রক্রিয়াকরণ, চামড়া পরিবহন-সংরক্ষণ ও ওষুধ খাত ছাড়া বন্ধ ছিল সব ধরনের শিল্প-কারখানা। তবে ১ আগস্ট থেকে রফতানিমুখী শিল্প-কারখানা খুলে দেয়া হয়। এরপরও বন্ধ রয়েছে দোকান ও শপিংমলও। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষের বাইরে বের হওয়াও নিষেধ।
তবে বিধিনিষেধ দেয়ার পরও নিয়ন্ত্রণে আসেনি করোনা সংক্রমণ। বরং দিনকে দিন অবনতি হচ্ছে পরিস্থিতির।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সর্বশেষ সোমবারের হিসাব অনুযায়ী, একদিনে ২৪৬ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ৯৮৯ জন। এর মধ্যে বিধিনিষেধ আরও ১০ দিন বাড়ানোর সুপারিশ করেছিল স্বাস্থ্য অধিদফতর।