আইনজীবী থেকে শুরু করে চিকিৎসক, নার্স, সেনাবাহিনীতে কর্মরত নারীসহ মোট ১৪ জনকে বিয়ের অভিযোগে আটক হয়েছেন ৬৬ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। এবার তার আরো তিন স্ত্রীর খোঁজ মিলল। এ নিয়ে তার স্ত্রীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ জনে।
ভারতের দিল্লি, পাঞ্জাব, আসাম, ঝাড়খণ্ড এবং ওড়িশাসহ সাত রাজ্যে ১৪ জনকে বিয়ের অভিযোগে পুলিশের জালে প্রথমে ধরা পড়েন বিয়েপাগল ওই ব্যক্তি।
গত সোমবার তাকে ভুবনেশ্বর থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ভুবনেশ্বরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার উমাশঙ্কর দাশ জানান, অভিযুক্তের আরো তিন স্ত্রীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তার মোবাইল ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হবে এবং তার আর্থিক লেনদেন তদন্ত করা হবে।
ওড়িশার জগতসিংপুর জেলার একজন ছাত্র অভিযোগ করেছেন, ভুয়া ডাক্তার তাকে একটি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ১৮ লাখ টাকা নিয়ে প্রতারণা করেছে।
পুলিশ বলেছে, অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি ওড়িশার কেন্দ্রাপাড়ার পাতকুড়া থানার বাসিন্দা। নিজেকে চিকিৎসক হিসেবে ভুয়া পরিচয় দিয়ে নারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। ছত্তিশগড়ের ব্যাংকার, আসামের একজন চিকিৎসক এবং ওড়িশার উচ্চশিক্ষিত নারীর সঙ্গেও গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন তিনি।
বিবাহ-সম্পর্কিত ওয়েরবসাইটগুলোতে নিজেকে চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিয়ে নারীদের সঙ্গে আলাপ শুরু করতেন। তিনি শিকার হিসেবে বেছে নিতেন মাঝবয়সী অবিবাহিত নারী ও ডিভোর্সিদের। এভাবে একে একে তার ফাঁদে পড়েছেন চিকিৎসক, আধা সামরিক বাহিনীতে কর্মরত নারী, আইনজীবী এমনকি উচ্চশিক্ষিত নারীরাও।
অভিযুক্ত প্রথম বিয়ে করেন ১৯৮২ সালে। দ্বিতীয় বিয়ে করেন ২০০২ সালে। ভুবনেশ্বরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার উমাশঙ্কর দাশ জানান, প্রথম এবং দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর মোট পাঁচ সন্তান। ২০০২ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বিবাহ-সম্পর্কিত ওয়েবসাইটে গিয়ে নারীদের সঙ্গে আলাপ জমিয়ে তাঁদের বিশ্বাস অর্জন করার পর বিয়ে করতেন। ঘটনাচক্রে, যত জনকে তিনি বিয়ে করছেন, কেউই তার আগের বিয়ের ব্যাপারে কিছুই টের পাননি।
ডেপুটি পুলিশ কমিশনার আরো বলেছেন, শুধু বিয়ে করাই অভিযুক্তের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল না। তার মূল উদ্দেশ্য ছিল চাকরিজীবী নারীদের বিয়ে করে তাঁদের টাকা-পয়সা আত্মসাৎ করা। প্রতিবারই তিনি বিয়ের পর স্ত্রীদের টাকা হাতিয়ে পালাতে সক্ষম হয়েছেন।
কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের জুলাইয়ে একজন শিক্ষিকা ভুবনেশ্বরে অভিযোগ করেছেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, এক ব্যক্তি তাঁকে ২০১৮ সালে দিল্লিতে বিয়ে করে ভুবনেশ্বরে নিয়ে আসেন। ওই ব্যক্তি বেশ কয়েকবার বিয়ে করেছেন বলেও অভিযোগ করেছিলেন ওই নারী। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্তে নামে পুলিশ।
পুলিশ বলেছে, অভিযুক্তের কাছ থেকে ১১টি এটিএম কার্ড, চারটি আধার কার্ড এবং বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করা হয়েছে। নারীদের ফাঁসিয়ে বিয়ে করে টাকা হাতানো ছাড়াও আরো প্রতারণার কাজে জড়িত ছিলেন অভিযুক্ত। এর আগে যুবকদের চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নিয়েও প্রতারণা করার অভিযোগে হায়দরাবাদে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি।
সূত্র : এনডিটিভি।