বেসিক ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতি ও অর্থপাচারের মামলায় ব্যাংকটির চার কর্মকর্তাকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ বাতিল করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
সোমবার এ আদেশ দেওয়া হয়।
গত ৯ আগস্ট বেসিক ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতি ও অর্থপাচারের মামলায় ব্যাংকটির চার কর্মকর্তাকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছিলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার আদালত।
এর আগে বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির মামলায় চার কর্মকর্তাকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
গত ৩ আগস্ট বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এএম মাছুম। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের শুনানি নিয়ে ওই আদেশ দেন।
আগাম জামিন আবেদনকারী চার কর্মকর্তার মধ্যে হেড অফিসের এজিএম সাদিয়া আক্তার শাহীন ২০ মামলায়, আরেক কর্মকর্তা মো. জালাল উদ্দিন ১৮ মামলায়, গুলশান শাখার এজিএম রুমানা আহাদ ১৩ মামলায় এবং মতিঝিল লোকাল অফিসের এজিএম এএসএম আনিসুর রহমান ১৮ মামলায় জামিন চেয়েছিলেন।
বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির ৫৯ মামলায় ১৪৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একটি ছাড়া বাকি ৫৮ মামলায় ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুকে চার্জশিটভুক্ত আসামি করা হয়েছে। ১২ জুন সাংবাদিকদের ব্রিফ করে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন এ তথ্য জানান।
ওইদিন রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে দুদক সচিব মাহবুব হোসেন জানান, বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যানসহ ৪৬ কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের
স্বত্বাধিকারীসহ এজাহারনামীয় এবং তদন্তে নাম আসা আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। তারা অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গ করে অন্যায়ভাবে নিজেরা লাভবান হয়ে এবং অন্যকে লাভবান করে ভুয়া মর্টগেজ, মর্টগেজের অতিমূল্যায়ন এবং মর্টগেজ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে বেসিক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ২ হাজার ২৬৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করেন। ৫৯টি মামলার মধ্যে দুদকের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মোরশেদ আলম ছয়টি, মোহাম্মদ ইব্রাহিম ১৫টি, মো. মোনায়েম হোসেন ১৭টি, মোহাম্মদ সিরাজুল হক তিনটি ও মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান ১৮টি মামলার তদন্ত করেছেন। তাদের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই কমিশন আদালতে চার্জশিট দাখিলের অনুমোদন দিয়েছে