নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি নেই মোটা চাল-ডাল-আলু-পেঁয়াজ-সবজির বাড়তি দামে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস

নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি নেই মোটা চাল-ডাল-আলু-পেঁয়াজ-সবজির বাড়তি দামে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক

দীর্ঘদিন ধরেই নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি নেই। বাজারে মোটা চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ ও সবজির বাড়তি দামে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চাল ২ থেকে ৩ টাকা, মসুর ডাল কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা এবং আলু প্রতি কেজি ৫ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি মাছ-মাংসের বাজার, কাঁচাবাজার, এমনকি মসলাজাত পণ্যের ও দাম বেড়েছে।

আজ শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সপ্তাহজুড়ে ঝাঁজ বেড়েছে পেঁয়াজের বাজারে। ভালো মানের দেশি পেঁয়াজের কেজি গত সপ্তাহে ৬০ থেকে ৭০ টাকার মধ্যে থাকলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। মাঝারি মানের দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি।

রামপুরা বাজারে এক চাল ব্যবসায়ী বলেন , তিনদিন আগে বিআর-২৮ চাল কিনেছেন প্রতি কেজি ৫২ টাকা দরে। এখন ৫৫ টাকা। স্বর্ণা চালের সরবরাহ না থাকায় প্রভাব পড়েছে অন্যান্য মোটা চালের দামে। বেড়েছে পাইজামের দামও।

তবে তিনি বলেন, সরু চালের দাম বাড়েনি। এখন মিনিকেট ৬৮ থেকে ৭০ টাকা ও নাজিরশাইল চাল ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। যা গত সপ্তাহেও এক-ই ছিল।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে ন্যূনতম ৫০-৬০ টাকার কমে কোনো সবজি মিলছে না। কেজিতে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, আলু ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বড় আকারের কালো লম্বা বেগুন ১১০, গোল বেগুন ৯০-১০০ টাকা, ফুলকপি ৫০-৬০ টাকা পিস, কাঁকরোল ৮০ টাকা ও কাঁচা পেঁপে ৫০-৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বাজারভেদে পটল, ঝিঙা, বরবটি, শসা, কচুর মুখী ও করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৯০ টাকায়।

এছাড়া শসা ৬০-৭০ টাকা, মূলা ৬০ টাকা, ধুন্দল ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, আকারভেদে লাউয়ের পিস ৮০ টাকা ও চালকুমড়া ৭০-৮০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে চলতি সপ্তাহে খুচরা পর্যায়ে সব ধরনের মসুর ডালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। প্রতি কেজি মোটা মসুর ডালের কেজি এখন ৯৫ থেকে ১০৫ টাকা, যা গত সপ্তাহেও প্রতি কেজি মোটা মসুর ডাল ৯০ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। মাঝারি আকারের মসুর ডালের কেজি ৫ টাকা বেড়ে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় উঠেছে। আর ভালো মানের, অর্থাৎ সরু দানার মসুর ডালের কেজি পড়ছে এখন ১৩৫ থেকে ১৪৫ টাকা। গত সপ্তাহে এই ডালের খুচরা দাম ছিল ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা কেজি।

অপরদিকে সম্প্রতি ডিমের দাম হঠাৎ করে বেড়ে যায়। ডজনে দাম হয়ে গিয়েছিল ১৮৫ টাকা। তবে বর্তমানে প্রতি কেজিতে ফার্মের মুরগির ডিম হালিতে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। এছাড়া হাসের ডিমের হালি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, স্থানভেদে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে পাঙ্গাস বিক্রি হচ্ছে। বড় ও মাঝারি তেলাপিয়া ২৩০ টাকা থেকে ২৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এক কেজির রুই-কাতলার ফাম হাঁকানো হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকা কেজি। দুই থেকে আড়াই কেজি ওজনের রুই-কাতলার মাছের দাম প্রতি কেজি ৩৭৫ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শোল মাছ প্রতি কেজি ৬০০-৬৫০ টাকা। শিং মাছ, বাইলা মাছ প্রতি কেজি প্রকারভেদে ৬০০-৬৭০ টাকা।

এদিকে মাংসের বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। সোনালী মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা। দেশি মুরগি কিনতে কেজিতে খরচ ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা। গরুর মাংস ৮০০ টাকা, খাসির মাংস ১১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। স্থানভেদে কম-বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

অর্থ বাণিজ্য শীর্ষ সংবাদ