সুইজারল্যান্ডের ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা নোভার্টিস তাদের ‘স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রফি’ (এসএমএ)-এর জিন থেরাপি ‘জোলজিন্সমা’ চালানোর ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদন পেল। স্নায়ুর জিনগত এই রোগের এককালীন চিকিৎসার খরচ প্রায় ২১ লাখ ডলার (১৭ কোটি ৬৬ লাখ ৭০ হাজার ৯০০ টাকা)। যা চিকিৎসাবিজ্ঞানে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
দুবছরের কমবয়সি যে সব বাচ্চাদের এসএমএ রয়েছে, তাদের উপর জোলজিন্সমা ব্যবহারে অনুমোদন দিয়েছে ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’। যারা ইতিমধ্যে এসএমএ রোগে আক্রান্ত, আর যাদের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে এই রোগের উপসর্গ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে- এই দু’টো ক্ষেত্রেই এই থেরাপি প্রয়োগ করা যাবে।
এসএমএ’র মতো জিনগত রোগে প্রতিবছর অনেক বাচ্চা আক্রান্ত হয়। এই রোগে পঙ্গুত্ব, শ্বাসের সমস্যাতো বটেই, মৃত্যুও হতে পারে। এই থেরাপি এসএমএ-তে আক্রান্ত শিশুদের বাবা-মাকে আশার আলো দেখাবে বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা। এই থেরাপিতে, ভাইরাসের মাধ্যমে স্বাভাবিক ‘সার্ভাইভাল অফ মোটর নিউরন ১’ (এসএমএন১) জিন শরীরের ত্রুটিযুক্ত জিনকে প্রতিস্থাপন করে।
নোভার্টিস সংস্থার কর্মকর্তাদের দাবি, এই রোগের দীর্ঘকালীন চিকিৎসা অনেক বেশি ব্যয়বহুল, সেই তুলনায় এই এককালীন চিকিৎসা অনেক সস্তা। নোভার্টিসের দাবি, এর মধ্যে কমপক্ষে ১৫০ জন রোগীর উপর তারা এই থেরাপি প্রয়োগ করেছে। জন্মের পর পরই এই থেরাপি দেওয়া হলে প্রায় সম্পূর্ণ রোগমুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে।
কিন্তু তথ্য বলছে, রোগ প্রতিরোধে এই থেরাপির সাফল্য খুব বেশি হলে পাঁচ বছর। নোভার্টিস এবার এই থেরাপিতে ইউরোপ ও জাপানের অনুমোদন পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।
এর আগে এসএমএ’র অনুমোদিত চিকিৎসা পদ্ধতি বলতে ছিল বায়োজেনের ‘স্পিনরাজা’। ২০১৬ সালে অনুমোদন পাওয়া ‘স্পিনরাজা’ থেরাপিতে চার মাস অন্তর মেরুদণ্ডে ইঞ্জেকশন দেওয়ার প্রয়োজন হয়। সেই থেরাপির খরচ প্রথম বছরে ৭,৫০,০০০ ডলার, পরবর্তী বছরগুলিতে গড়ে ৩,৭৫,০০০ ডলারের মতো।