শিক্ষা ডেস্ক
২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার খাতা পুনর্নিরীক্ষণের ফল প্রকাশ করা হবে আগামী ১৬ নভেম্বর। সেদিন সকাল ১০টায় ফল প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে তিনি জানান, শিক্ষার্থীরা যাতে দ্রুত ফল জানতে পারে, সে জন্য পুনর্নিরীক্ষণের সব কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ১৬ নভেম্বর সকাল ১০টায় ফল প্রকাশ করা হবে।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি খাতা সতর্কতার সঙ্গে যাচাই করা হয়েছে যাতে পুনর্মূল্যায়নে কোনো ত্রুটি না থাকে। ফল প্রকাশের পর শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে নিজেদের ফল জানতে পারবেন।
শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবারের পুনর্নিরীক্ষণ প্রক্রিয়ায় রেকর্ডসংখ্যক আবেদন জমা পড়েছে। দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে মোট ২ লাখ ২৬ হাজার শিক্ষার্থী খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছেন। তারা মোট ৪ লাখ ২৮ হাজার খাতা পুনর্মূল্যায়নের জন্য চ্যালেঞ্জ করেছেন।
সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে, আর সবচেয়ে কম আবেদন এসেছে বরিশাল বোর্ডে। বিষয়ভিত্তিকভাবে ইংরেজি ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ে সর্বাধিক আবেদন পাওয়া গেছে।
গত ১৬ অক্টোবর মূল ফল প্রকাশের পর ১৭ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত সাত দিন শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারেন। প্রতি বিষয়ে ১৫০ টাকা ফি দিয়ে পুনর্নিরীক্ষণের জন্য আবেদন গ্রহণ করা হয়।
ঢাকা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২ লাখ ৯২ হাজার ৫৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬৬ হাজার ১৫০ জন পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছেন। এতে মোট ১ লাখ ৩৬ হাজার ৫০৬টি খাতা যাচাইয়ের জন্য জমা পড়ে।
এর পরেই রয়েছে কুমিল্লা ও রাজশাহী বোর্ড। কুমিল্লা বোর্ডে ২২ হাজার ৫০৩ জন শিক্ষার্থী ৪২ হাজার ৪৪টি খাতা, রাজশাহী বোর্ডে ২০ হাজার ৯২৪ জন শিক্ষার্থী ৩৬ হাজার ১০২টি খাতা এবং চট্টগ্রাম বোর্ডে ২২ হাজার ৫৯৫ জন শিক্ষার্থী ৪৬ হাজার ১৪৮টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছেন।
যশোর বোর্ডে ২০ হাজার ৩৯৫ জন শিক্ষার্থী মোট ৩৬ হাজার ২০৫টি খাতা চ্যালেঞ্জ করেছেন। দিনাজপুর বোর্ডে ১৭ হাজার ৩১৮ জনের আবেদন অনুযায়ী ২৯ হাজার ২৯৭টি খাতা যাচাই করা হবে। ময়মনসিংহ বোর্ডে ১৫ হাজার ৫৯৮ জন শিক্ষার্থী ৩০ হাজার ৭৩৬টি খাতা, সিলেট বোর্ডে ১৩ হাজার ৪৪ জন ২৩ হাজার ৮২টি খাতা এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে (বিটিইবি) ১২ হাজার ৭ জন ১৫ হাজার ৩৭৮টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণের জন্য জমা পড়েছে।
মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে ৭ হাজার ৯১৬ জন শিক্ষার্থী ১৪ হাজার ৭৩৩টি খাতা পুনর্মূল্যায়নের আবেদন করেছেন। বরিশাল বোর্ডে সবচেয়ে কম আবেদন পড়েছে—৮ হাজার ১১ জন শিক্ষার্থী ১৭ হাজার ৪৮৯টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেন।
উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় দেশের ৯ হাজার ১৯৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ১১ হাজার ৪৪৭ জন এবং ছাত্রী ৬ লাখ ২৪ হাজার ২১৫ জন।
ফলাফলে দেখা যায়, মোট ৭ লাখ ২৬ হাজার ৯৬০ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে, যা মোট পরীক্ষার্থীর ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ফেল করেছে ৫ লাখ ৮ হাজার ৭০১ জন শিক্ষার্থী, যা ৪১ দশমিক ১৭ শতাংশ। ছাত্রীদের পাসের হার ৬২ দশমিক ৯৭ শতাংশ, আর ছাত্রদের ৫৪ দশমিক ৬০ শতাংশ।
শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পুনর্নিরীক্ষণের ফল প্রকাশের পর যেসব শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হবে, তাদের সংশোধিত ফলাফলের তথ্য সংশ্লিষ্ট বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে এবং প্রয়োজনে নতুন সনদ ও নম্বরপত্র দেওয়া হবে।


