৩০তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু হচ্ছে পূর্বাচলে

৩০তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু হচ্ছে পূর্বাচলে

অর্থনীতি ডেস্ক

৩০তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ) আগামী ১ জানুয়ারি থেকে পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে শুরু হচ্ছে। মেলার শুভ উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।

সংবাদ সম্মেলনে ইপিবি ভাইস চেয়ারম্যান হাসান আরিফ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) আব্দুর রহিম খান ও ইপিবির মহাপরিচালক বেবি রাণী কর্মকার উপস্থিত ছিলেন। বাণিজ্য সচিব জানান, এবারের মেলায় বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টল ও প্যাভিলিয়ন অনলাইনের মাধ্যমে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দর্শনার্থীরা অন-স্পট টিকিটের পাশাপাশি ই-টিকিটিং ব্যবস্থার মাধ্যমে কিউআর কোড স্ক্যান করে মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন।

মেলায় দর্শনার্থীদের যাতায়াত সুবিধার্থে বিআরটিসির ডেডিকেটেড বাস সার্ভিসের পাশাপাশি কনসেশনাল রেটে ‘পাঠাও’ সার্ভিসও চালু করা হবে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর বিভিন্ন কার্যক্রম ও রপ্তানি খাতসমূহের সক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য ‘এক্সপোর্ট এনক্লেভ’ নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরণে ‘বাংলাদেশ স্কয়ার’ স্থাপন করা হয়েছে।

মেলায় সম্ভাবনাময় সেক্টর ও পণ্যভিত্তিক সেমিনার আয়োজন করা হবে। বিদেশি উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সুবিধার্থে আলাদা ইলেকট্রনিকস ও ফার্নিচার জোন তৈরি করা হয়েছে। সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য বিশেষ সিটিং কর্নার এবং শিশুদের বিনোদনের জন্য দুটি শিশু পার্ক থাকবে। এছাড়া মহিলা, প্রতিবন্ধী, কুটির, তাঁত, বস্ত্র ও হস্তশিল্পের উদ্যোক্তাদের জন্য সংরক্ষিত স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ হিসেবে মেলায় পলিথিন ব্যাগ ও সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিকল্প হিসেবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে হ্রাসকৃত মূল্যে পরিবেশবান্ধব শপিং ব্যাগ সরবরাহ করা হবে। মেলায় মাসব্যাপী সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ তরুণদের উদ্ভাবনী উদ্যোগকে উৎসাহিত করার বিভিন্ন আয়োজন থাকছে।

পঞ্চমবারের মতো পূর্বাচলে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এ মেলায় ৩২৪টি প্যাভিলিয়ন, স্টল ও রেস্টুরেন্ট থাকবে। প্রদর্শিত পণ্যের মধ্যে রয়েছে দেশি বস্ত্র, মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিকস, ইলেকট্রনিক্স, ফার্নিচার, পাটজাত পণ্য, গৃহসামগ্রী, চামড়াজাত পণ্য, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, হোম ডেকর এবং প্রসেসড ফুড ও হস্তশিল্পজাত পণ্য।

মেলার বিভিন্ন সেক্টরে ব্যাংকিং সার্ভিসের জন্য এটিএম বুথ, মা ও শিশু কেন্দ্র, রক্ত সংগ্রহ কেন্দ্র, মসজিদ ও দর্শনার্থীদের বিশ্রামের জন্য আরামদায়ক চেয়ার বেঞ্চ, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য সিটিং কর্নার রাখা হয়েছে। দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে কুড়িল বিশ্বরোড, ফার্মগেট, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী থেকে সকাল ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ডেডিকেটেড শাটল বাস চলবে।

প্রাপ্তবয়স্কদের টিকিটের মূল্য ৫০ টাকা এবং ১২ বছরের নিচের শিশুদের জন্য ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী ও জুলাই আন্দোলনের আহতরা তাদের কার্ড প্রদর্শনপূর্বক বিনামূল্যে প্রবেশ করতে পারবেন। মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা ৫৫ মিনিট থেকে রাত ৯টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত চলবে, সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে রাত ১০টা পর্যন্ত।

১৯৯৫ সাল থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর যৌথ উদ্যোগে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা আয়োজন করা হচ্ছে। এর মূল লক্ষ্য দেশীয় পণ্য প্রচার, উৎপাদন ও বিপণনকে উৎসাহিত করা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা।

অর্থ বাণিজ্য শীর্ষ সংবাদ