জানুয়ারিতে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন গ্রিন সিগন্যালের অপেক্ষায় ইসি

 

গোলাম রাব্বানী;

 

আগামী ১৪ নভেম্বর ঢাকা উত্তর, ১৮ নভেম্বর ঢাকা দক্ষিণ এবং আগামী বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হচ্ছে। এই তিন সিটির নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে আজ বৈঠকে বসছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৈঠকে সচিবালয়ের পক্ষ থেকে দুটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হতে পারে। জানুয়ারিতে ঢাকার দুই সিটিতে ভোট করা এবং মার্চে তিন সিটিতে একই দিনে ভোট করা। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল একই দিনে তিন সিটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, জানুয়ারিতে ঢাকার দুই সিটিতে ভোটগ্রহণ হতে পারে। আর মার্চে হতে পারে চট্টগ্রাম সিটির নির্বাচন। এ বিষয়ে সরকারের গ্রিন সিগন্যাল পেলে ১৮ নভেম্বরের পরে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের তফসিলও হতে পারে। আর ফেব্রুয়ারিতে হবে চট্টগ্রাম সিটির তফসিল। এ জন্য আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে ঢাকার দুই সিটির ভোটকেন্দ্রের অবস্থা জানাতে সংশ্লিষ্ট থানা নির্বাচন অফিসারদের নির্দেশনাও দিয়েছে ঢাকা জেলা নির্বাচন অফিস। অন্যদিকে মার্চে একই সঙ্গে তিন সিটিতে ভোট করার বিষয়ে ইসির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হলে তবে নির্বাচনের তফসিল হবে ফেব্রুয়ারিতে। ইসির নির্বাচন শাখার কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকার দুই সিটিতে ডিসেম্বরে ভোট হলে নতুন ভোটারদের নিয়ে আইনি জটিলতা হতে পারে। তবে মার্চে ভোট হলে তেমন কোনো সমস্যা নেই। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন এবং জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের তারিখ ডিসেম্বরের শেষের দিকে নির্ধারিত হওয়ায় ঢাকার ভোট ডিসেম্বরের পরে দেওয়ার যুক্তি দেখাচ্ছেন অনেকেই। এক্ষেত্রে বড় দুই দলের সম্মেলনের সময় ঢাকায় ভোট দেওয়া কতটুকু যুক্তিযুক্ত হবে তা নিয়েও পর্যালোচনা করা হবে। এ ছাড়া জানুয়ারিতে শুধু ঢাকার দুই সিটিতে ভোট এবং মার্চে চট্টগ্রামে ভোট দিলে ইসির জন্য কিছু সুবিধা রয়েছে। কেননা তিন সিটিতে দুই দফায় ভোট হলে ইসি সুষ্ঠু ভোটের ক্ষেত্রে নজর দিতে পারবে। কাজের চাপ কম হবে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণেও সুবিধা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ডিসেম্বর, জানুয়ারি না মার্চে ভোট হবে তা সরকারের ওপর নির্ভর করছে। সরকারের গ্রিন সিগন্যালের অপেক্ষায় রয়েছে ইসি। এর আগে সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠানে দুই ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছিল কমিশন। প্রথমত, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ বা জানুয়ারিতে শুধু ঢাকার দুই সিটিতে ভোট অনুষ্ঠান করা। দ্বিতীয়ত, আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলে একই দিনে ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটিতে ভোট অনুষ্ঠান করা। ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল একই দিনে ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটির ভোট হয়েছিল। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন অনুযায়ী, পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার ১৮০ দিন আগে যে কোনো সময় ভোট করতে হবে। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২০১৫ সালের ১৪ মে, দক্ষিণ সিটিতে ওই বছরের ১৭ মে এবং চট্টগ্রাম সিটিতে ৬ আগস্ট প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে হিসেবে ঢাকা উত্তরের মেয়াদ হবে আগামী বছরের (২০২০ সালের) ১৩ মে পর্যন্ত; আর দক্ষিণে ১৬ মে পর্যন্ত। চট্টগ্রাম সিটির মেয়াদ শেষ হবে ২০২০ সালের ৫ আগস্ট।

কমিশন বৈঠক ৮ বিষয়ে : কমিশনের আজকের বৈঠকের আলোচ্য সূচিতে আটটি বিষয় রয়েছে। এগুলো হলো- জাতীয় সংসদ নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন-২০১৯ এর খসড়া পুনর্বিবেচনা; গণপ্রতিনিধিত্ব আইনের খসড়া চূড়ান্তকরণ; উপজেলা পরিষদের সংরক্ষিত সদস্য পদে নির্বাচন; ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের প্রস্তুতি; স্থানীয় সরকারের অন্যান্য নির্বাচন; জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য গোপনবিষয়ক নির্দেশনা এবং কমিশনের বর্তমান কার্যক্রম নিয়ে প্রতিবেদন ও প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করা। ইসির কর্মকর্তারা বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন-২০১৯ এর সংশোধনী এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ- ১৯৭২ (আরপিও) সংশোধন করে আইনে রূপান্তর করার বিষয়ে সরকারের সায় নেই। ইতিমধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইনের খসড়া আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হলে তা ফেরত এসেছে।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ